মো. কামরুজ্জামান, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধিঃ নেত্রকোনায় গৃহকর্মী মারুফার ময়নাতদন্ত রিপোর্টের দাবিতে মোহনগঞ্জ থেকে নেত্রকোনা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় পর্যন্ত ‘অভিযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করেছে সূর্যমুখী থিয়েটার কর্মীরা।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে মঙ্গলবার(২৩ জুন) সকাল থেকে দিনব্যাপী সংক্ষিপ্ত আলোচনা, সাংস্কৃতিক সমাবেশ বারহাট্টা ও নেত্রকোনা অভিমুখে যাত্রা করে মানববন্ধন কর্মসূচি করে তারা। দুপুরে নেত্রকোনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এসে অভিযাত্রাটি
পৌঁছায়।
এসময় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে কাফনের কাপড় পড়ে ও মশাল জেলে প্রতিকী কর্মসুচি পালন করে। এই কর্মসুচিতে মারুফার হত্যাকান্ডের বিচার ত্বরান্বিত করতে অবিলম্বে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেয়ার দাবী জানান তারা।
এর আগে মোহনগঞ্জ শহীদ মিনার চত্বরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করে বারহাট্টা উপজেলা শহীদ মিনার চত্বরে সাংস্কৃতিক সমাবেশ করে।
এসময় বক্তব্য রাখেন সুর্যমুখী থিয়েটারের সভাপতি হাবিবুর রহমান হানিফ, সদস্য শাহিদুল ইসলাম সাব্বির, সাবিনা আক্তার,
হাসনিল তমা, সাইফুল ইসলাম হিমেল, আমিনুল ইসলাম পিয়াসসহ অন্যরা। পরে তারা সিভিল সার্জন ডাক্তার তাজুল ইসলামের হাতে রিপোর্ট চেয়ে একটি আবেদ তুলে দেন।
উল্লেখ্য, নেত্রকোনার বারহাট্টা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মাহবুব মোর্শেদ কাঞ্চনের মোহনগঞ্জ বাসায় কিশোরী গৃহকর্মী মারুফার মারা যায় গত ৯ মে বিকালে। কিশোরীর লাশ চেয়ারম্যান কাঞ্চন নিজেই হাসপাতালে নিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেছে বলে জানালে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রাকানা মর্গে পাঠায়। কিন্তু পরবর্তীতে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে চেয়ারম্যানের ভয়ে মারুফার নানাবাড়ি কলমাকান্দায় দাফন করা হয়। এদিকে মারুফা আত্মহত্যা করেছে বলে মা আকলিমাকে লিখিত নিতে চাপ প্রয়োগ করলে পরবর্তীতে ৯৯৯ এ কল করে পুলিশের সহয়াতা চান তিনি।
পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসীর হস্তক্ষেপে ১১ মে মামলা করেন কিশোরীর মা। ওইদিন রাতে পুলিশ চেয়ারম্যান কাঞ্চনকে আটক করে কোর্টে সোপর্দ করলে ১৪ মে জামিনে বের হেয় যান চেয়ারম্যান কাঞ্চন।
এদিকে মারুফার গায়ে নানা জখমের চিহ্ন সহ মৃত্যুর ছবি ও ঘটনা ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে জেলাসহ সর্বস্তরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এনিয়ে লাগাতা আন্দোলন শুরু করেন সকল পর্যায়ের মানুষ। এদিকে এই ঘটনার দীর্ঘদিনেও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না আসায় আন্দোলনকারীরা একের পর এক কর্মসূচি করে যাচ্ছে।