ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে সিআরপিএফের বাসে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত ভারতীয় জওয়ানের সংখ্যা বেড়ে ৪২ জনে দাঁড়িয়েছে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এ খবর দিয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার অবন্তীপোরার বাইপাসের কাছে গোরীপোরা এলাকায় জম্মু-শ্রীনগর ছয় নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর এই হামলা চালানো হয়। ঘটনায় জখম হন বহু জওয়ান। তাঁদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭০টি গাড়িতে কমপক্ষে আড়াই হাজার সিআরপিএফ জওয়ানের বহর এদিন টহলদারিতে যাচ্ছিলেন। সাধারণত সেনা বাহিনীর বহর যাত্রার সময় রাস্তায় সাধারণ গাড়ি চলাচল থামিয়ে দেওয়া হয়। তবে পুলিশ বা সিআরপিএফের বহর যাত্রার সময় সেই নিষেধাজ্ঞা থাকে না। যে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গোরীপোরার কাছে আদিল আহমেদ দার নামে জইশ-ই-মুহাম্মদের এক আত্মঘাতী হামলাকারী প্রায় ২০০ কেজি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে বহরের মধ্যে ঢুকে পড়েন। ঢুকেই তিনি বহরের একটি গাড়িতে ধাক্কা মারেন। ফলে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ঘটে। যে গাড়ির সঙ্গে ধাক্কায় বিস্ফোরণ ঘটে সেটিতে ৫০ জনেরও বেশি জওয়ান ছিলেন বলে জানা যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আট ভারতীয় সিআরপিএফ জওয়ানের। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বাকিদের। বিস্ফোরণের পাশাপাশি এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে পালান হামলাকারীরা।
ঘটনার পর এলাকা ঘিরে ফেলে তল্লাশি শুরু করে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। বন্ধ করে দেওয়া হয় ছয় নম্বর জাতীয় সড়ক। ঘটনার পর একটি স্থানীয় সংবাদ সংস্থার কাছে পাঠানো বার্তায় জইশ-ই-মুহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে জানা গেছে।
এই ঘটনায় সিআরপিএফের মহাপরিচালক আর আর ভাটনগর বলেছেন, সিআরপিএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পুলওয়ামা রওনা দিয়েছেন। তদন্ত চলছে।
এরই মধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরের ডিজির সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সঙ্গেও টেলিফোনে কথা বলেছেন তিনি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার জম্মু-কাশ্মীর যাবেন। পুলওয়ামার পরিস্থিতির ওপর নজরদারি চালাচ্ছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।
এ ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সিআরপিএফদের ওপর এই ঘৃণ্য হামলার তীব্র নিন্দা করছি। জওয়ানদের বলিদান ব্যর্থ হবে না। জঙ্গিরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে। সারা ভারত আজ মৃত জওয়ানদের পরিবারের পাশে রয়েছে।