একে এম কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: উদ্বৃত্ত ধান উৎপাদনের জেলা নওগাঁয় চলতি মওসুৃমে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে এ বছর জেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারন অধিপ্তর নওগাঁ’র উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শামসুল ওয়াদুদ জানিয়েছেন বর্তমানে জেলার আত্রাই, রানীনগর উপজেলায় এবং সদর উপজেলার দক্ষিনে বিলাঞ্চলে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এসব এলাকার কর্ত্তৃনকৃত ধানের হিসেবে প্রতি হেক্টরে চালের আকারে ৪ দশমিক ২০ মেট্রিক টন ফলনের প্রত্যাশা করছে কৃষি বিভাগ। আর আগামী ১০ দিনের মধ্যে জেলায় পুরোদমে ধান কর্ত্তন শুরু হবে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।
কৃষি বিভাগের সুত্র অনুযায়ী এ বছর জেলায় মোট ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ৭শ ৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৭ হাজার ৯শ ৯০ হেক্টর, রানীনগর উপজেলায় ১৮ হাজার ৮শ হেক্টর, আত্রাই উপজেলায় ১৮ হাজার ৪শ হেক্টর, বদলগাছি উপজেলায় ১১ হাজার ৭শ ৫০ হেক্টর, মহাদেবপুর উপজেলায় ২৮ হাজার ৩শ ৭০ হেক্টর, পত্নীতলা উপজেলায় ১৯ হাজার ৬শ ৫০ মেট্রিক টন, ধামইরহাট উপজেলায় ১৮ হাজার ৬শ ৫ হেক্টর, সাপাহার উপজেলায় ৫ হাজার ২শ ৩০ হেক্টর, পোরশা উপজেলায় ৮ হাজার ৫০ হেক্টর, মান্দা উপজেলায় ১৯ হাজার ৯শ ৩০ হেক্টর এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় ২০ হাজার ৯শ ৮৫
হেক্টর।
জেলায় চলতি বছর উন্নত ফলনশীল জাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসেবে জিরাশাইল, ব্রি ধান-২৮, ব্রিধান-২৯, ব্রিধান-৮১, ব্রি ধান-৫৮, কাটারীভোগসহ প্রায় ২৬ জাতের ধান চাষ করেছেন। অপরদিকে হাইব্রীড জাতের মধ্যে তেজ, এস এল-৮ এইচ, হিরনা-২,
হিরা-৬ ও ঝলকসহ প্রায় ২৮ জাতের ধান চাষ করেছেন।
কৃষি বিভাগের সুত্র মতে, হেক্টর প্রতি ৪ দশমিক ২০ মেট্রিক টন হিসেবে এ বছর জেলায় মোট ৭ লক্ষ ৮৮ হাজার ৫শ ৯২ মেট্রিক টন চাল উৎপাদিত হবে বলে প্রত্যাশা করা যাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানিয়েছেন জেলার পুরো ধান কর্ত্তন করতে মোট ৪ লাখ ২৫ হাজার ৪০ জন শ্রমিকের প্রয়োজন। নওগাঁ জেলায় স্থানীয়ভাবে শ্রমিক রয়েছেন ৩ লক্ষ ৪৬ হাজার ১শ ৮৫ জন। ঘাটতি ৭৮ হাজার ৮শ ৫৫ জন শ্রমিক অন্য
জেলা থেকে নিয়ে আসতে হবে।
লকডাউনের এই পরিস্থিতিতে শ্রমিক সংকট হবে কিনা এ ব্যপারে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল ওয়াদুদ জানান ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সাথে পরামর্শ করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ তাঁদের স্ব স্ব উপজেলায় শ্রমিকরে চাহিদাপত্র প্রেরন করছেন। চাহিদা অনুযায়ী শ্রমিক দেশের অন্যান্য জেলা থেকে আনয়নের পদক্ষেপ ইতিমধ্যে প্রহণ করা হয়েছে। ধান কর্ত্তনের জন্য শ্রমিক সংকট হবে না বলে তিনি জানিয়েছেন।