কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ প্রতিনিধি: বয়সের ভারে শরীরটা ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে। চলাচলের ক্ষমতাও হারিয়ে গেছে। এমনকি চোখে যা একটু দেখা হয় সেটাও অস্পষ্ট। তৃতীয় পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মেয়ে রেজিয়ার কোলে চড়ে ভোট দিতে কেন্দ্রে এসেছিলেন নব্বই বছর বয়সী বৃদ্ধা আয়েশা বেওয়া। গেল রোববার সকাল পৌনে ৯ টায় নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের জগৎনগর (কলকুঠি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিয়েছেন তিনি।
গোপালপুর গ্রাম থেকে ভ্যানে করে কেন্দ্রের চত্বরে প্রবেশ করেন। এরপর সেখান থেকে মেয়ের কোলে করে ভোট কক্ষে যান। তার অবস্থা দেখে কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসার সদস্যরা অন্যদের থেকে আগেই ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। একই ভ্যানে করে এসেছিলেন আরেক বয়োজ্যেষ্ঠ বৃদ্ধা সুনছি। তিনি তার মেয়ে কাঞ্চনের কাঁধে ভর করে ভোট কক্ষে গিয়ে ভোট দিয়েছেন।
বৃদ্ধা আয়েশা বেওয়া বলেন, জীবনের শেষ সময় এসে মেয়ের কোলে চড়ে ভোট দিলাম বাপো। আর হয়ত ভোট দিবার পারমু কিনা আল্লাহ ভাল জানে। শরীলডা আর চলে না। তারপরও ভোট দিচি।
বৃদ্ধার মেয়ে রেজিয়া বলেন, বাড়িতে গিয়ে মেম্বাররা জোরাজুরি করছিল মাকে নিয়ে যেন ভোটটা দিয়ে আসি। মা চলাফেরা করতে পারে না। ভ্যানে করে কেন্দ্রে নিয়ে আসার পর কোলে করে কক্ষে গিয়ে ভোট দিলাম। সঙে নিজের ভোটও দিয়েছি।
জগৎনগর (কলকুঠি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এস.এম জামান বলেন, এ কেন্দ্রের মোট ভোটার ২ হাজার ১১৬। যেখানে পুরুষ ভোটার ১ হাজার ২৭৯ জন এবং মহিলা ভোটার ৮৩৭ জন। সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২৫০ টি। সুষ্ঠু সুন্দর ভাবে ভোট গ্রহন হয়।
পেশায় গৃহিণী ২৩ বছর বয়সী নতুন ভোটার মাহবুবা খানম। তিনি বদলগাছীর উপজেলার পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন। তিনি বলেন, ভোটার হয়েছেন কয়েক বছর আগে। কিন্তু আগে কখনও ভোট দেননি। জীবনের প্রথম ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিয়েছেন। নতুন এ পদ্ধতিতে ভোট দিতে পেরে তিনি আনন্দিত। ভালো লাগছে। কোনো ঝামেলা ছাড়াই সবাই সুন্দর ভাবে ভোট দিয়েছে।