কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ প্রতিনিধি : কাঙ্খিত বৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে নওগাঁ জেলার অবারিত মাঠ জুড়ে রোপা আমন ধানের চারা রোপনের উৎসব পরিলক্ষিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না থাকায় আমন ধান রোপন নিয়ে কৃষকদের মধ্যে যে হতাশা দেখা দিয়েছিল তা এখন আশায় পরিনত হয়েছে। মাঠে মাঠে জমিতে হাল চাষ, সেচ দেয়া, বীজতলা থকে চারা উত্তোলন আর সে চারা চাণকৃত জমিতে রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন এ জেলার কৃষকরা। ক্ষেতের পানিতে কলের লাঙ্গল আর দেশীয় জাতের লাঙ্গলের শব্দ, দুর থেকে ভেসে আসা কৃষকদের নানা হাকডাকে মুখরিত এখন দিগন্ত জোড়া মাঠ।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মঞ্জুরে মওলা জানিয়েছেন, নওগাঁ জেলায় জমিতে খরিপ-২/ রোপা আমন ধানের চারা রোপনের ভরা মওসুম হচ্ছে জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। কাঙ্খিত বৃষ্টি হওয়ায় এ জেলার কৃষকরা তাদের জমিতে পুরোদমে ধান লাগাতে শুরু করেছেন।
সূত্রমতে, এ বছর জেলায় ১ লাখ ৯৭ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রীড জাতের ১ হাজার হেক্টর, উন্নত ফলনশীল (উফশী) জাতের ১ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ২৫ হাজার ১১০ হেক্টর।
উপজেলা ভিত্তিক ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে নওগাঁ সদর উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ২৫০ হেক্টর, উফশী জাতের ৮৭২০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ১০১৫ হেক্টরসহ মোট ৯ হাজার ৯৮৫ হেক্টর। রানীনগর উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ৩০ হেক্টর, উফশী জাতের ১৭,৪৪০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ১২২০ হেক্টরসহ মোট ১৮ হাজার ৬৯০ হেক্টর। আত্রাই উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ১০০ হেক্টর, উফশী জাতের ৫,৩০০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ১২৯৫ হেক্টরসহ মোট ৬ হাজার ৬৯৫ হেক্টর। বদলগাছি উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ৫ হেক্টর, উফশী জাতের ১২,৭৯০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ১৫৩০ হেক্টরসহ মোট ১৪ হাজার ৩২৫ হেক্টর। মহাদেবপুর উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ৩১০ হেক্টর, উফশী জাতের ১৮,৬২০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৯৬৮৫ হেক্টরসহ মোট ২৮ হাজার ৬১০ হেক্টর। পত্নীতলা উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ৭০ হেক্টর, উফশী জাতের ২৩,০৭০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৪০১০ হেক্টরসহ মোট ২৭ হাজার ১৫০ হেক্টর। ধামইরহাট উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ২১০ হেক্টর, উফশী জাতের ১৯,৬৫৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৫৯০ হেক্টরসহ মোট ২০,৪৫৫ হেক্টর। সাপাহার উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ৫ হেক্টর, উফশী জাতের ৮৫৪৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ১২৪০ হেক্টরসহ মোট ৯,৭৯০ হেক্টর। পোরশা উপজেলায় হাইবীড জাতের ৫ হেক্টর, উফশী জাতের ১৪,৪৭৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ১১০০ হেক্টরসহ মোট ১৫,৫৮০ হেক্টর, মান্দা উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ১০ হেক্টর, উফশী জাতের ১৫,৬৩০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ২৮৫ হেক্টরসহ মোট ১৫,৯২৫ হেক্টর এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ৫ হেক্টর, উফশী জাতের ২৬,৭৫৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৩১৪০ হেক্টরসহ মোট ২৯,৯০০ হেক্টর।
চলতি আমন মওসুমে চাষকৃত জমির ধান থেকে মোট ৬ লক্ষ ২১ হাজার ৪৭৭ মেট্রিকটন চাল উৎপাদিত হবে বলে প্রত্যাশা কৃষি বিভাগের। এর মধ্যে হাইব্রীড ধান থেকে ৪২৯০ মেট্রিকটন, উফশী জাতের ধান থেকে ৫ লক্ষ ৬৭ হাজার ৭২০ মেট্রিক টন এবং স্থানীয় জাতের ধান থেকে ৪৯ হাজার ৪৬৭ মেট্রিক টন চাল।