নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ নওগাঁ সদর উপজেলার হাপানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চকতারুল গ্রামের মৃত আমজাদ ফকিরের ছেলে শাহাজান হোসেন (৪৫) সাথে একই গ্রামের সাইতুল হোসেনের মেয়ে লাবলি বেগম (৪০) এর বাসার সামনে ভেকে ভোর ৫ টার সময় অনৈতিক সম্পর্ক আছে এমন সন্দেহ করে স্বামী কাজল হোসেন (৪৫) আটক করে শাহাজান হোসেনকে মারপিট করে আটক করে রাখে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত (০২ মার্চ) বুধবার সকালে লাভলি বেগমের স্বামী কাজল হোসেন, শাহাজান হোসেন কে দু হাত বেঁধে রেখে বিচার শালিসের আয়োজন করে। বিচারে এলাকার মন্ডল বাবলু হোসেন, রহিদুল হোসেন, ইমন হোসেন হাপানিয়া ৮নং ওর্য়াড মেম্বার মিলন হোসেনের সহযোগীতায় শাহাজান হোসেন কে বিচারে মারপিট করে রক্তাক্ত করে এবং বিচারে ইউপি সদস্য মিলন হোসেন জরিমান বাবদ শাহাজান হোসেন কে এক ঘন্টার মধ্যে ১৫ হাজার ও লাভলি বেগমকে ১৫ হাজার টাকা মোট ৩০ হাজার টাকা অর্থ জরিমানা করেন। জরিমানার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গ্রামে থাকতে দিবেন না বলে জানিয়ে দেন ইউপি সদস্য মিলন। ইউপি সদস্যর চাপে জরিমানার টাকা ৮হাজার টাকা রহিদুল হোসেন কে বুঝিয়ে দিয়ে শাহাজানকে মারাত্মক আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় তার পরিবার।
অপর দিকে লাভলি বেগম ও তার পরিবার মান সন্মানের দিকে তাকিয়ে ১০ হাজার টাকা ইউপি সদস্য মিলনের হাতে বুঝিয়ে দেন। কিন্তু বিচারের ৮হাজার টাকা নিয়ে মিলন আত্মসাৎ করেন। এলাকার মন্ডল রহিদুল হোসেন মিলনের মধ্য ঝামেলার সৃষ্টি হয়।
এই বিষয়ে লাভলি বেগমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা গরীব মানুষ অনেক কষ্ট করে কাজ করে সংসার চলে কিন্তু সে দিন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার স্বামী শাহাজান হোসেন কে মারধর করে। আমার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক কেউ দেখতে পায়নি এমনকি আমার স্বামীও। বিচারের নামে আমার কাছ থেকে জোর পূর্বক ১০হাজার টাকা নিয়েছে মিলন মেম্বার।
শাহাজান হোসেনের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামীকে অন্যায় ভাবে মেম্বারের সামনে অনেক মারধোর করেছে রক্তাক্ত করেছে। আমার স্বামীকে কোন অবৈধ কাজ করতে পারার কেউ দেখেনাই এমনকি লাভলী বেগমের বাবা, বোন, ভাগিনা দেখে নাই। অন্যায় ভাবে মারধর করে বিচারের নামে ১০ টাকা জোরপূর্বক নিয়েছে। আমার মেয়েকে তার শশুড় বাসায় পাঠিয়ে দিব টাকার জন্য পাঠাইতে পারতেছি না আমরা খুব গরীব মানুষ খুব কষ্ট করে টাকা দিয়েছি। স্বামী অসুস্থ কাজ কাম করতে পারতেছ না। কি খাব কোথায় যাব কিছু বুঝতেছিনা। মেম্বার ও তার সহযোগী দের আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিলন হোসেন বলেন, বিচার করা হয়েছে, তারা অবৈধ কাজ করেছে এজন্য এলাকার মন্ডল মাতব্বররা জরিমানা করেছে। এই জরিমানা না করলে তাদের উচিত শিক্ষা হবেনা। এ টাকা পয়সা সব আছে রহিদুল ও ইমনের কাছে। এই টাকা তারা কি করবে আমি জানিনা। আমি শুধু চা নাস্তার জন্য টাকা-পয়সা নিয়েছি। এটা কোন অপরাধ নয় আমি চা নাস্তার জন্য নিতে পারি। এই বিষয়ে চেয়ারম্যান সাহেবে অবগত আছেন।
৫নং হাপানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান মোস্তাক রাজা বলেন, আমি কোন বিচারের বিষয়ে কেউ জানায়নি। কোন টাকা-পয়সা লেনদেন হয়েছে কিনা জানা নাই। কোন ইউপি সদস্য বিচারের নামে টাকা-পয়সা জরিমানা করতে পারেনা। যদি কেউ করে থাকে আমার কাছে অভিযোগ করলেন ব্যবস্থা গ্রহণ করব।