কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ নওগাঁর পত্নীতলায় ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে থানায় অভিযোগ করেছেন মেয়েটির বাবা।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, মো. আমিনুল এহসান বাবু (৪২), পিতা- মৃত আব্দুর রহমান, মো. জাকিরুল ইসলাম(৩৫), পিতা- মো. আবু তাহের মন্ডল, উভয় পত্নীতলার হাসেনবেগপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামে বাড়ী এবং অভিযোগ কারির বাড়ী একই গ্রামে পাশাপাশি অবস্থিত। গত প্রায় ০২ বছর পূর্বে অভিযোগকারীর স্ত্রী মোছা. রাশিদা পারভীন সুলতানা (৩৪) মো. আমিনুল এহসান বাবুর সাথে প্রেম ভালোবাসার সম্পর্কে লিপ্ত হয়। বিষয়টি অভিযোগকারী বিভিন্ন ভাবে মোঃ আমিনুল এহসান বাবুকে নিষেধ করেন। মো. আমিনুল এহসান বাবু অভিযোগকারীর কথায় কোন কর্নপাত না করে বিভিন্ন ভাবে হুমকী দিয়া বলে যে, বেশি কথা বলিলে আমি তোর স্ত্রীর সাথে তোর মেয়েকেও ধর্ষন করবো। পারলে কিছু করে দেখাস বলে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রান নাশের হুমকী প্রদান করে।
অভিযোগকারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গত প্রায় ০৭ মাস পূর্বে মো. জাকিরুল ইসলামের ইন্ধনে মো.আমিনুল এহসান বাবু আমার স্ত্রীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখাইয়া পত্নীতলা থানাধীন নজিপুর পৌরসভাস্থ নজিপুর গালর্স স্কুল মোড়ে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে গত প্রায় ০২ মাস পূর্বে আমার স্ত্রী আমার মেয়ে ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী (ছদ্মনাম) শারমিন আক্তার (১৫) কে বিভিন্ন লোভ লালসা ও প্রলোভন দেখাইয়ে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায় এবং আমার মেয়ে আমার স্ত্রীর সাথেই বসবাস করতে থাকে। পরবর্তীতে গত প্রায় ০১ মাস ১৫ দিন পূর্বে মো. আমিনুল এহসান বাবু সাথে আমার স্ত্রীকে শারীরিক মেলামেশা অবস্থায় আমার মেয়ে দেখতে পাইলে আমার মেয়েকে এলোপাতাড়ী ভাবে মারপিট করে এবং মানসিক ভাবে নির্যাতন করে।
একপর্যায়ে মো. আমিনুল এহসান বাবু বলে যে, এই ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বললে আমি তোমাকে প্রানে মারে ফেলবো। আমার মেয়ে প্রান ভয়ে উক্ত ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বলে না। পরবর্তীতে গত ইং ১৭/০৬/২০২২ তারিখ রাত্রী অনুমান ০৭.৩০ ঘটিকার সময় আমার স্ত্রী আমার মেয়েকে উক্ত ভাড়া বাড়ীতে রেখে নজিপুর বাসষ্ট্যান্ড কাঁচা বাজার করতে যায়। একই দিন রাত্রী অনুমান ০৮.০০ সময় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে আমার মেয়ের কাছে এসে মো. আমিনুল এহসান বাবু আমার মেয়েকে জোর করে ঘরে নিয়ে গিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দিতে থাকে, আমার মেয়ে রাজি না হইলে মো.আমিনুল এহসান বাবু ও সাথে থাকা তার সহযোগী মো. জাকিরুল ইসলাম আমার মেয়েকে স্বজোরে চড় থাপ্পর মাড়ে এবং আমার মেয়ের পরিহিত কাপড় টানা হেচড়া করিয়া খুলিয়া ধর্ষনের চেষ্টা করে। ওই সময় আমার স্ত্রী বাজারশেষে বাড়ীতে এসে আমার মেয়ের চিৎকার শুনে দ্রুত ঘরে গিয়ে উদ্ধার করে। এমন অবস্থায় আমার স্ত্রী ও মেয়েকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও প্রান নাশের হুমকী প্রদান করে ঘটনার বিষয়টিকে ধামা চাপা দিয়ে রাখে।
পরবর্তীতে আমার মেয়ে কৌশলে প্রান ভয়ে ভাড়া বাড়ী হইতে আমার বাড়ীতে চলে আসে। এমতবস্থায় গত ইং ২৩/০৮/২০২২ তারিখ সকালে মো. আমিনুল এহসান বাবু উজিরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে আমার বাড়ীর পার্শ্বে পুকুর পাড়ে আমার মেয়েকে একা দেখতে পেয়ে পুনরায় আমার মেয়েকে খারাপ কু-প্রস্তাব দেয়। আমার মেয়ে কু-প্রস্তাব দিতে নিষেধ করিলে তিনি বলে যে, আমার কথা না শুনিলে আমি তোমাকে অল্প কিছুদিনের মধ্যে অপহরন করে নিয়ে গিয়ে তোমাকে ধর্ষন করবো বলে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও প্রান নাশের হুমকী প্রদান করে চলে যায়। বর্তমানে আমি এবং আমার মেয়ে তাদের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। সুযোগ পাইলে যেকোন সময় আমার ও আমার মেয়ের বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। বিষয়টি আমি আমার আত্মীয়-স্বজন ও গ্রাম প্রতিবেশিদের সাথে আলোচনা করে তাদের পরামর্শক্রমে থানায় এসে অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তির জন্য অভিযোগ করি।
উজিরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আমিনুল এহসান বাবুর সাথে মুঠোফোনে ০১৭১২—৪৮১২ নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কথা বলতে রাজি নয়।
পত্নীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. শামসুল আলম শাহ্ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।