ধর্ষন এক যঘন্য অপরাধ। সম্প্রতিকালে বাংলাদেশে ধর্ষন প্রবনতা বেড়ে গেছে। সিলেটের এমি সি কলেজে এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে সংগঠিত ধর্ষনের প্রতিবাদ জানিয়েছে জনগন। সকলের সাথে আমিও তীব্রভাবে এই যঘন্য অপরাধের নিন্দা জানাই এবং অপরাধীর কঠিন শাস্তি দাবী করি। কিন্তু ধর্ষনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্লেকার্ডে যে সব শ্লোগান লেখা দেখেছি তার ভাষা ছিল অশালীন এবং অশোভন। ধর্ষকদের পক্ষে বক্তব্য দেয়নি কেউ। অনেকে গুলি করে হত্যা করারও দাবী জানিয়েছেন ধর্ষকদের। ক্ষমতাসিন সরকারের কাছেই দাবী করবেন এটাই নিয়ম। কিন্তু সরকার পতনের দাবী ধর্ষকদের সাথে মিলিয়ে উদ্দেশ্যটি পরিস্কার করে দিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেও অকথ্য ভাষায় গালি দিয়েছে প্লেকার্ডে। এই ষড়যন্ত্র নতুন নয়, ষড়যন্ত্রকারীরাও পরিচিত সবার কাছে।
ধর্ষনের খবর প্রকাশ হওয়ার পর অপরাধীদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন, কেউ ছাড়া না পায়। যে কোন দলের যতবড় নেতাই হউক ছাড় দেওয়া হবেনা। বাংলাদেশের পুলিশ ঘূষ খায়, এটাই ছিল মোক্ষম সুযোগ ঘুষ খেয়ে অপরাধীকে ছেড়ে দাওয়ার বা জামিন পাওয়ার। কিন্তু পুলিশ তা করেনি, আদালতও জামিন দেয়নি। দেশের বিজ্ঞ আইনজিবীরাও ধর্ষকদের পক্ষে কোর্টে যেতে অস্বিকৃতি জানিয়েছে। ইতিমিধ্যে শাহেদের জাবজ্জীবন আর মিন্নির ফাঁসির দন্ডাদেশ দিয়ে আদালত প্রমান করেছে, দেশের আইন সবার উপরে। শাহেদ আর মিন্নিদের বিচারের রায় প্রমান করেছে সরকার জনগনের পক্ষে। তাহলে সরকার পতনের ডাক দিল কারা এবং কেন? ধর্ষন সব সরকারের আমলেই হয়েছে কিন্তু, এই সরকারই ধর্ষকদের বিচারের আওতায় এনেছে। ঠকবাজ, ঘুষখোর আর অবৈধ সম্পদ গড়েছে সব সরকারের আমলেই কিন্তু, শুধু বর্তমান সরকারই তাদেরকে ধরে বিচারের ব্যবস্থা করেছে। দলীয় নেতা-কর্মীকেও ছাড় দেয়নি। তাহলে আন্দোলন করে সরকার হটানোর স্বপ্ন দেখে কারা?
সত্যটি হল, রাজনৈতিকভাবে সরকারকে মোকাবেলা করার শক্তি ক্ষমতালিপ্সু নেতাদের নেই। জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলন করার সাংগঠনিক শক্তি তাদের নেই। জনগন যখন ধর্ষনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে, ক্ষমতা লিপ্সু নেতারা সরকার পতনের শ্লোগানটি জুড়ে দিয়েছে। যারা এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন তারাও সরকার পতনের দাবী নিয়ে মিছিলে যায়নি। তারা গেছে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতে। অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দন্ডাদেশ দিলে এই নেতারাই আবার ভিন্ন বক্তব্য দিবে বিচারের বিপক্ষে। সরকারের বিরোধিতা করা দোষের নয় তবে, শুধুই বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যটি জানান দিয়েছে। যারা এই ধোকাবাজির রাজনীতি করেন তার বহু আগেই প্রত্যাখ্যত হয়েছেন জনগনের কাছে।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরন্টো, কানাডা
৮ অক্টোবর ২০২০।