পাকিস্তান আমলে ২২ পরিবারের কথা শোনা যেত প্রায়ই। বলাহত, এই ২২ পরিবারের কছেই দেশের ধনসম্পদ রয়েছে। এদের মধ্যে মাত্র একটি পরিবার ছিল বাংলাদেশের(পুর্ব পাকিস্তানের)। ৭১ এর ১৬ ই ডিসম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের আত্নসমর্পনের মাধ্যমে ২১ পরিবার বিতারিত হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। যে পরিবারটি বাংলাদেশের তাদের নাম পরিচয়ও এখন আর খুঁজে পাওয়া যায়না। এখন বাংলাদেশে কত হাজার ধনী পরিবার আছে কেউ জানেনা। এদের ধনসম্পদের পরিমান কত তা’ও জানার উপায় নেই।
পাকিস্তানের ২২ পরিবারের কাছে ছিল আদমজি, বাওয়ানী আর ইস্পাহানীর মত বড় বড় প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠানে কাজ করত হাজার হাজার শ্রমিক। এখন যারা বিত্ত্বশালী তাদের অনেকেরই তেমন কোন প্রতিষ্ঠান নেই, তবুও তারা অর্থবিত্ত্বের মালিক হচ্ছে। ২২ পরিবারের দীর্ঘ ইতিহাস ছিল, বাপ দাদারাও ধনী ছিল। বাংলাদেশে যারা এখন ধনী তাদের পরিচয় কি? তেজগাঁও শিল্প এলাকার অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান ছিল “রহিম মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজ”। যিনি এই প্রতিষ্ঠানটির মালিক দাবী করেন তিনি, ৭৩ সাল পর্যন্ত কারখানার গেটের দারোয়ান হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন। কেমন করে এত বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক বনে গেলেন জানা যায়নি। আদমজী, বাওয়ানী, ইস্পাহানী বিক্রি করে দিয়েছে বিনামূল্যে ( প্রায়)। এইসব কারখানার পরিত্যক্ত মালামাল আর যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হাজার কোটি টাকার মালীক বনে গেছে। আর যারা এই শিল্প প্রতিষ্ঠানে ভাগ পায়নি, তারা ব্যংক লুট করেছে। তারা বিদেশে গিয়ে বিলাসী জীবন কাটাচ্ছে, তাদের উত্থান আর পরিচয়টি ২২ পরিবারের মত নয়। এছাড়াও অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে আদম ব্যবসায়ীরা। গরীবের জমি বেচা অর্থ নিয়ে বিদেশের লোভ দেখিয়েছে। লুট করছে ভূমী দস্যুরাও। এরাই এখন ধনী। দুর্বৃত্তদের সুযোগ করে দিয়েছে ঘূষ খোর আর দুর্নীতিবাজরা।অবাধ দুর্বৃত্তায়ন চলেছে সর্বত্র। ঘুষের অভয়ারন্যে নিম্ন শ্রেনীর কর্মচারীরাও পিছিয়ে থাকেনি অর্থ উপার্জনে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে অভিজাত এলাকার বাড়ী ঘরের মালিক সব এরাই। যেখানেই হাত দিবেন সেখানেই দুর্নীতি। যেখানেই অঢেল সম্পদ সেখানেই দুর্নীতি। ঘুষ আর দুর্নীতি ক্যন্সারে পরিনত হয়ে গেছে দেশে। রাজনীতিও দুর্নীতির দোষন থেকে মূক্ত থাকতে পারেনি। এখন অভিযান চলছে দুর্নীতি নির্মুল করার, কাজটি সহজ নয়। একদিন, একমাস বা এক বছরে এই ক্যন্সার নির্মুল করা যাবেনা। উদ্যোগটি অব্যহত রাখতে হবে যে দলই ক্ষমতায় আসুক।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরেন্টো, কানাডা
১৯ সেপ্টম্বর ২০২০