প্রধানত বায়ু দূষণের কারণেই দেশে ব্যাপকহারে বাড়ছে হাপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত রোগ। প্রতি বছর বায়ু দূষণে যখন লক্ষাধিক মানুষ মারা যাচ্ছে তখন শ্বাসকষ্টজনিত রোগেই আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে কোটিতে। আক্রান্তদের দ্রুত শনাক্তের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি কঠোরভাবে বায়ু দূষণ রোধের মাধ্যমেই হাঁপানি রোগের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলে মত বিশেষজ্ঞদের। বাংলাদেশ অ্যাজমা অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, দেশে হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ, যেখানে প্রতি বছর নতুন করে যোগ হচ্ছে প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, জনসচেতনতার অভাবের পাশাপাশি চিকিৎসক ও নার্সদের স্বল্পতায় হাপানি রোগীদের অধিকাংশই থেকে যাচ্ছেন চিকিৎসার বাইরে। রোগীরা বলেন, শ্বাস নিতে পারি না। দম বন্ধ হয়ে যায়। এতই কষ্ট। গ্যাস দিলে একটু ভাল লাগে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাপানি বা শ্বাসকষ্টের সবচে বড় কারণ বায়ুদূষণ। মোট দূষণের ৩৮ ভাগ ইট ভাটা সৃষ্ট হলেও তা বন্ধে নেই কোন কার্যকরী পদক্ষেপ। এছাড়াও অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, দীর্ঘ যানজটে ধীরগতির যানবাহন থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোয়া, খোলামেলাভাবে ভবণ নির্মাণসহ নানা কারণে শাসকষ্টজনিত রোগের কবলে পড়ছে সাধারণ মানুষ। জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড.আতিক রহমান বলেন, ইটভাটা কমাতে হবে। যানবাহনের উন্নয়নসহ গাড়ি চলতে দিতে হবে। শিল্প সব সময় শিল্প এলাকায় থাকবে। সেখানে দূষণের মাত্রা কমানোর জন্যে ব্যবস্থা নিতে হবে। দ্রুত সনাক্তের মাধ্যমে এই রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে সমস্যা সমাধানে প্রান্তিক পর্যায়ে চিকিৎসার সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।বক্ষব্যাধি চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. বশির আহমেদ বলেন, সরকার যদি প্রতি জেলায় বিশেষজ্ঞের পদ তৈরি করে তবে তাহলে জেলা পর্যায়ে সেবা পাওয়া সম্ভব। বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞের চরম সংকটের কথা জানিয়ে বক্ষব্যাধি হাসপাতালের পরিচালক বলেন, দূষণ রোধে পরিবেশ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের সমন্বিত পদক্ষেপ ছাড়া শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রকোপ কমানো সম্ভব নয়। বক্ষ্যব্যাধি হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ‘আমরা এই হাসপাতালকে ১৫’শ শয্যা বিশিষ্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ বায়ু দূষণ রোধে রাজধানীসহ সারাদেশে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টকারী ইউক্যালিপটাস, আকাশমণিসহ ক্ষতিকর গাছ দ্রুত কেটে ফেলতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিশেষজ্ঞরা।