নির্বাচন নিয়ে দেশে রাজনীতি এখন উত্তপ্ত। বি এন পি’ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। ই ভি এম পদ্ধতি বাতিল এবং নিরপেক্ষতা নিয়েও নিত্য অভিযোগ করছে দলটি। তাদের জোটভুক্ত দলগুলিও বি এন পি’র দাবী সমর্থন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দিয়েছে। বি এন পি নির্বাচন নিয়ে সরকারের সঙ্গে কোন প্রকার আলোচনায় বসতেও রাজি নয়। নেতাদের বক্তৃতা শুনে মনে হয় তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলেই তারা বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে ফেলবে। রাতারাতি দেশকে আমেরিকা ইউরুপের মত বানিয়ে ফেলবে। চিরদিনের জন্য দেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে এবং দেশে আর কোন রাজনৈতিক সংঘাত থাকবেনা। শ্রীলঙ্কার মত আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছে নেতারা। বি এন পি’র নেতারা স্বপ্ন দেখছে জনতা তাদেরকে চিরদিনের জন্য ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে।
বাস্তবতাটি কি আসলেই তাই? সত্যই কি বাংলাদেশের জনগন বি এন পি’কে সেই সমর্থন দিয়েছে? তা’ই যদি হয় তাহলে তো আন্দোলন করারও প্রয়োজন নেই। নির্বাচনে জনগনই তাদেরকে বিজয়ী করে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে। শক্তি প্রয়োগ করেও সরকার জনগনকে আটকাতে পারবেনা। কিন্তু সত্যটি হলো রাজনীতিতে তা ঘটেনি। ২০০৮ সালের নির্বাচিনে জনগন বি এন পি’কে প্রত্যাখান করেছে। এর পর থেকে কোন নির্বাচনেই দলটি জনগনের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। নির্বাচনে অংশ নিয়ে কোন প্রচারনায় নামেনি না হয় নির্বাচনের দিন প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে বসে গেছে। কারন নেতারা জানে জনগন তাদের পক্ষে নেই। নির্বাচনের পরে রাজনীতিকে বিভ্রান্ত করতে রাতে ভোট হয়েছে বলে প্রচারনা চালিয়েছে। নির্বাচিত সরকারকে অবৈধ বলে নিজেরাই সেই সংসদের সদস্য হয়ে সুবিধা নিচ্ছে। এমন স্ববিরোধী বক্তব্যে বি এন পি এখন জনবিচ্ছিন্ন।
বাস্তব চিত্রটি হলো বি এন পি রাজনীতিতে তাদের অযোগ্যতা প্রমান করেছে। সরকার পতনের আন্দোলনের নামে আগুন সন্ত্রাস করে একশ চল্লিশ জন মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। পবিত্র কোরআন শরিফ পুড়িয়ে ধর্মপ্রান মানুষের সমর্থন হারিয়েছে।বিদ্যুতের নৈরাজ্য, সারের জন্য কৃষক হত্যা আর হাওয়া ভবনের দুর্নীতি দেশের মানুষ কে আতঙ্কিত করেছে। এসব দুর্বিসহ স্মৃতি দেশের মানুষ ভুলে গেছে ভেবে এমন ভুলেই দলটি এখন ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। দেশে স্বাধীনিতার শত্রুদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করার অপকর্মটিও বি এন পি’ই করেছে। মৌলবাদকে উষ্কে দিয়ে হত্যার খেলাটিও শুরু করেছে বি এন পি! মুক্তিযোদ্ধা, ইতিহাস বিকৃতি সহ দেশে গনতন্ত্র হত্যা করেছে বি এন পি। দেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যম্পিয়ান করে বিশ্বে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে বি এন পি। তাদের হাতে আলাদিনের প্রদীপও নেই যে বি এন পি দেশকে বদলে দিবে। এখন তারাই গনতন্ত্র পুনরুউদ্ধারের শ্লোগান দেয়। এই দাবী হাস্যকর নয়ত কি!
অথচ যেই সরকারকে বি এন পি অবৈধ বলে গলা ফাটিয়ে বক্তৃতা করছে, সেই সরিকারটি দেশের অবস্থাটি বদলে দিয়েছে।বিরোধ আর হাজার রকম বাধা অতিক্রম করে পদ্মা সেতুর নির্মান করে ফেলেছে। কর্নফুলি নদীর তলদেশে টানেল নির্মান করে ফেলেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ দেশের অবকাঠামো বদলে দিয়েছে। বছরে ৩০ লক্ষ টিন খাদ্য ঘটতি এখন চাহিদা পুরন করে রপ্তানী করে। বিদ্যুতের সরবরাহ এখন দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলে চলে গেছে। দেশের উৎপাদন এবং রপ্তানী এখন সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। রিজার্ভের পরিমান এখন ৫০ বিলিয়ন ডলার। বিদেশী প্রচার মাধ্যমেই বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে প্রচার করছে। যারা একসময় বাংলাদেশকে তলা বিহীন ঝুড়ি আখ্যা দিয়ে বিদ্রুপ করেছে, তারাই এখন অন্য দেশকে বাংলাদেশকে অনুসরনের পরামর্শ দেয়! নিকট প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলি বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের মানুষ এখন সবই জেনে গেছে। মানুষ এখন সচেতন এবং সবাক। তাহলে বি এন পি কোন অদৃশ্য শক্তির ইন্দনে হুঙ্কার দেয় তা বোধগম্য নয়। আসলে নিজেদের অবস্থান টের পেয়ে দলটি এখন দিশেহারা হয়ে আবোলতাবল বকছে।