বাংলাদেশে দ্রুত দরিদ্র লোকের সংখ্যা কমছে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বৈশ্বিক বহুমাত্রিক দারিদ্র্যতা সূচক (এমপিআই)-এ বাংলাদেশের এই অগ্রগতি দেখা গেছে।
ওই সূচকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই ১০ বছরে প্রায় এক কোটি ৯৩ লাখ মানুষ দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, ২০০৪ সালে বাংলাদেশে ৯ কোটি ৩৭ লাখ দরিদ্র লোক ছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে তা কমে সাত কোটি ৪৪ লাখে দাঁড়ায়।চলতি বছর মোট ১০১টি দেশের ওপর ভিত্তি করে ওই সূচক তৈরি করা হয়। এসব দেশের মধ্যে ৩১টি নিম্ন আয়ের, ৬৮টি মধ্যম আয়ের আর দুটি উচ্চ আয়ের দেশ রয়েছে। এসব দেশে সবমিলিয়ে ৫২০ কোটি মানুষ বসবাস করেন। এর মধ্যে ১৩০ কোটি মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্য। এদের দুই-তৃতীয়াংশই আবার মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বসবাস করেন।১০টি নির্দেশকের ওপর ভিত্তি করে এই সূচকটি তৈরি করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে-পুষ্টি, শিশু মৃত্যুহার, শিক্ষা, রান্নার জ্বালানি, স্যানিটেশন, খাবার পানি, বিদ্যুৎ, আবাসন এবং সম্পদ।এমপিআই সূচকে দেখা গেছে, ১০টি দেশের ২০০ কোটি মানুষ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-১ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে পরিসংখ্যানগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। যদিও এসব দেশের মধ্যে আটটির এমপিআই মান কমেছে। তবে সামগ্রিকভাবে এসব দেশের বহুমাত্রিক দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে।ইউএনডিপি’র প্রতিবেদন অনুসারে- বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া এবং ভারতে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে দরিদ্রতা কমছে। এসব দেশের অন্তত ৯টি সূচকে উন্নতি হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, হাইতি, ভারত ও পেরুতে প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে শিশু দরিদ্রতা আরও দ্রুত গতিতে কমেছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দরিদ্র হিসেবে চিহ্নিত ১৩০ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় অর্ধেক ৬৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষের বয়স ১৮ বছরের নিচে। আর ৪২ কোটি ৮০ লাখ মানুষের বয়স ১০ বছরের নিচে। এসব শিশুদের প্রায় ৮৫ শতাংশই দক্ষিণ এশিয়া ও সাব-সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলে বাস করে।এদিকে ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের এমপিআই মান একই (শূন্য দশমিক ১৯৮) দেখা গেছে। তবে বাংলাদেশের চেয়ে পাকিস্তানে বৈষম্যের হার বেশি বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে।উল্লেখ্য, এসডিজি-১ বাস্তবায়নের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হয় এমপিআই। এসডিজির প্রধান লক্ষ্যই হলো বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচন করা।