ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মের সরকার পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে টিকে গেছে। বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন সরকারের ওপর যে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন বুধবার রাতে তার ওপর ভোট হয়। এতে প্রস্তাবের বিপক্ষে পড়ে ৩২৫ ভোট, পক্ষে পড়ে ৩০৬ ভোট। অর্থাৎ ১৯ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে এ যাত্রায় টিকে গেল তেরেসা মের সরকার।
বিদ্রোহী টোরি পার্টির এমপিরা এবং ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির (ডিইউপি) যারা ২৪ ঘণ্টা আগে প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মের ব্রেক্সিট পরিকল্পনাকে রেকর্ড ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করায় ভূমিকা রেখেছিলেন, তারাই বুধবার অনাস্থা ভোটে তেরেসা মেকে ডাউনিং স্ট্রিটে রাখার পক্ষে অবস্থান নেন।
মঙ্গলবার রাতে ব্রিটিশ এমপিরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে দেশটির বেরিয়ে আসার ব্রেক্সিট চুক্তিকে বিপুল ভোটের মাধ্যমে প্রত্যাখ্যান করার পর তেরেসা মেকে এই অনাস্থা প্রস্তাবের মুখে পড়তে হয়। মঙ্গলবার রাতে তেরেসা মে তার ব্রেক্সিট পরিকল্পনা পাসের উদ্যোগ নিয়ে আধুনিক ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পরাজয় বরণ করার পর বিরোধী লেবার পার্টির নেতা করবিন সরকারের ওপর অনাস্থা প্রস্তাব আনে। পাশাপাশি সাধারণ নির্বাচনও দাবি করেন তিনি।
হাউস অব কমন্সে মের উত্থাপিত ব্রেক্সিট প্রস্তাবের বিপক্ষে ৪৩২ ভোট ও পক্ষে মাত্র ২০২ ভোট পড়ে। এর মাধ্যমে গত বছরের শেষ দিকে ব্রাসেলসে ইইউর বিশেষ শীর্ষ বৈঠকে করা ব্রেক্সিট চুক্তিটিকে এমপিরা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেন।
ভোটের পরপরই ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জ্যাঁ ক্লঁদ জাঙ্কার ব্রেক্সিটের বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব ব্রিটেনের অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানান। সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় প্রায় শেষ হয়ে গেছে বলেও তিনি সতর্ক করেন। এই ভোটে শোচনীয় পরাজয়ের পর মে তার সুর নরম করেন। তিনি আগামী সোমবার নতুন পরিকল্পনার আগেই একটি গ্রহণযোগ্য বেক্সিট চুক্তিতে উপনীত হতে সব দলের সাথে আলোচনা করার প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির চার দশকের সম্পর্কোচ্ছেদের রায় হয়। ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার নির্ধারিত সময় আগামী ২৯ মার্চ। মঙ্গলবার রাতে পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তি প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী তেরেসা তিন দিনের মধ্যে বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপনের সুযোগ পাবেন। সেই প্রস্তাবও যদি প্রত্যাখ্যাত হয়, তবে চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদের পথে হাঁটতে হবে যুক্তরাজ্যকে।
অবশ্য ব্রেক্সিট থেকে ফিরে আসার পথও খোলা রয়েছে যুক্তরাজ্যের সামনে, যার জন্য এমনকি ইইউর অন্য দেশগুলোর অনুমোদনেরও প্রয়োজন হবে না।