ড: ইউনুসের নোবেল জয় বাংলাদেশের জন্য সুনাম বয়ে এনেছেন। বাংলাদেশের মানুষও যথাযথ সম্মান দেখিয়েছে ড:মোহাম্মদ ইউনুসকে। তবে নোবেল জয়ী হলেই কেউ আইনের ঊর্ধ্বে চলে যাবেন বিষয়টি তা নয়। ড: ইউনুসও একজন মানুষ এবং তিনিও ভুল করতে পারেন। নোবেল জয়ের সঙ্গে এর কোনই সম্পর্ক নেই।
ড: ইউনুস গ্রামীন ব্যঙ্ক প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং নিজে তার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এম ডি) ছিলেন। ব্যঙ্কের নিয়ম অনুযায়ী এই পদে থাকার বয়স নির্দিষ্ট করা আছে। সেই বয়স উত্তীর্ন হওয়ার পর অবসরে যাওয়ার বিধান রয়েছে। ড: ইউনুস তা মানেননি। আইন অমান্য করে অতিরিক্ত ১০ বছর এম ডি পদে থেকেছেন। স্থায়ীভাবে আজীবন এই পদে থাকতে আদালতেও গেছেন। কিন্তু আদালত তার সেই চাওয়ার বৈধতা দেয়নি। সেই থেকেই শুরু হয়েছে ড: ইউনুস উপাখ্যান।
গ্রামীন ব্যাঙ্কের কর্মচারীরা ব্যাঙ্কের অংশীদার। অংশীদারিত্বের হিস্যা না পাওয়ায় তারা মামলা করেছে আদালতে। এ ছাড়াও বিপুল পরিমান আয়কর ফাঁকি দিয়েছেন ড: ইউনুস। সেই আয়কর মামলাও হয়েছে ড: ইউনুসের বিরুদ্ধে। এবং সেই কর কিস্তির কিছু অংশ পরিশোধও করেছেন। গ্রামীন ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের রাজস্ব বিদেশে পাচার হচ্ছে। দুদক সেই বিষয়ে মামলা করেছে। দেশের অর্থ বিদেশে পাচার হলে সংশ্লিষ্ঠ সংস্থা তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিবে এটাই স্বাভাবিক। সেই ব্যবস্থাকে যদি কেউ ব্যক্তিগত বিদ্বেষ মনে করে তাহলে কার কি করার আছে!স্বাক্ষী প্রমানেও তার সত্যতা পেয়েছে আদালত। আদালত এই মামলার রায় দিলে তাকি অন্যায় হবে?
✪ আরও পড়ুন: যুদ্ধটি সহজ হবে না!
✪ আরও পড়ুন: বিএনপি দলের এক দফা
নোবেল জয়ী কিংবা যে কোন সাধারন মানুষ আইন সবার জন্য সমান। এখন প্রশ্নটি হল যে ১৪০ জন বিশ্বনেতা প্রধানমন্ত্রীর বরাবর চিঠি লিখে ড: ইউনুসের বিচার বন্ধের দাবী জানিয়েছেন তারা এই মামলার নথিপত্র দেখেছেন কিনা! ১৪০ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিশ্ব সেরা আইনজীবীও রয়েছেন! দেশের অভ্যন্তরেও ড: মোহাম্মদ ইউনুসের ভক্তকুলের সংখ্যা কম নয়। তারা যারা ড: ইউনুসকে নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন তারা এই মামলার বিষয়ে কতটুকু অবগত? এমন প্রশ্ন এখন সব মহলেই সোচ্চার হচ্ছে। কারন ড: ইউনুস একজন নোবেল জয়ী শিক্ষিত ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে কোনরকম অন্যায় হউক তা যেমন কাম্য নয় আবার শুধু নোবেল লরিয়েট বলে দেশের আইনও যেন অবজ্ঞা করা না হয়। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর।
অন্যদিকে যে বিশিষ্ঠজনেরা ড: ইউনুসের পক্ষে চিঠি লিখেছেন তাদের কাছে বিষয়টি পরিস্কার করার ব্যবস্থা করা হউক। এই চিঠি নিয়ে বিশ্বের বহু দেশের গনমাধ্যমে এখন আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিষয়টি পরিস্কার হলে সব আলোচনাই থেমে যাবে। কারন আইন তার আপন গতিতেই চলবে। এমনটি হলে কিভাবে এই চিঠি এলো সেই রহস্যটিও বেড়িয়ে পরবে। ড: মোহাম্মদ ইউনুসই একমাত্র নোবেল জয়ী নন যার বিরুদ্ধে মামলা চলছে। বিশ্বের আরও অনেক দেশে নোবেল বিজয়ী জেল খেটেছেন। এখনো জেলে আছেন কয়েকজন। তাদের বিষয়ে এই বিশ্বনেতারা কি ভূমিকা রেখেছেন এমন প্রশ্নও কেউ কেউ করেছেন। কিন্তু বিষয়টি জটিল হয়েছে যখন বাংলাদেশের নির্বাচনের নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছেন। চিঠির শিরোনাম এবং তাদের নির্বাচন নিয়ে সংশয় স্ববিরোধী। নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই নেতারা বাংলাদেশের সংবিধান নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন। এমন খবরদারী কুটনৈতিক শিষ্ঠাচারের লঙ্ঘন।
✪ আরও পড়ুন: রাজনীতি
✪ আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুল
মাননীয় প্রধানমিন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নির্বাহী প্রধান। কিন্তু আদালতের উপর নির্দেশ প্রদানের এখতিয়ার নির্বাহী পদের নেই। ড: ইউনুসের মত নোবেল জয়ী মামলায় অভিযূক্ত হয়ে জেলে গেলেও প্রধানমন্ত্রী সেই বিচার বন্ধ করতে পারবেন না। মিমাংসিত মামলা প্রত্যাহারের ক্ষমতা সরকারের নেই। যারা ড: ইউনুসের পক্ষে বিবৃতি দিচ্ছেন তাদের উচিৎ হবে ব্যক্তি নয় দেশের স্বার্থটি বিবেচনা করা। ড: ইউনুসের অর্জন নিয়ে কারও কোন সংশয় নেই। কিন্তু তার মত নোবেল বিজয়ী দেশের আইন মেনে চলবেন এটাও প্র্যাশিত। কারন দেশ সকলের স্বার্থের ঊর্ধ্বে।
✪ আরও পড়ুন: রাজকাহন
✪ আরও পড়ুন:গণতন্ত্র
✪ আরও পড়ুন:বিদেশী প্রেস্ক্রিপশনে শেখ হাসিনা চলেননা
✪ আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন এক চরম দু:সময় চলছে
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি