গতকাল রোববার (২৭ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর শেরাটন হোটেলে ডেঙ্গু মোকাবিলায় করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, চলতি বছর ডেঙ্গুর চিকিৎসায় সরকারের ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। রোগীপ্রতি সরকারের গড়ে ব্যয় হচ্ছে ৫০ হাজার টাকা।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনায় জড়িত স্টেক হোল্ডাররা।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী বলেন, চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই শত শত মানুষ এডিস মশাবাহিত এই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রাণহানির তালিকাটা বড় হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। এতে চলতি মৌসুমে সরকারের ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। দেশের ৭০ শতাংশ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন সরকারি হাসপাতালে। আর বাকি ৩০ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতালে। সাধারণত দুই ধরনের ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। অনেকের প্লাটিলেট ও আইসিইউ প্রয়োজন হয়। আবার অনেকে শুধু ওষুধেই সুস্থ হচ্ছেন। এ বছর ইতোমধ্যে ৫৩৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আক্রান্তের সংখ্যাও লাখ ছাড়িয়েছে। এখনও প্রতিদিন শত শত মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে খুব বেশি কাজে আসছে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১২ হাজার ১৮৪ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ লাখ ৩ হাজার ৪১১ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮ হাজার ২৩৬। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষের তুলনায় নারী কম। তবে মৃত্যুর ক্ষেত্রে নারীর হার বেশি। সারাদেশে মোট ভর্তি রোগীর ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৫ শতাংশ নারী। অথচ মোট মৃতের মধ্যে নারীদের হার ৬৫ শতাংশ। নারীরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা নিতে দেরি করছেন। তাদের অসুস্থতার ক্ষেত্রে পরিবারসহ আশপাশে মানুষদের নজর দিতে হবে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের অর্ধেকই ঢাকার বাসিন্দা। তাই ঢাকার ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অর্ধেক রোগী কমে যাবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আরও বলেন, এখন আমাদের দায়িত্ব চিকিৎসা দেওয়া। আমরা তা দিচ্ছি। আমরা রোগীদের স্যালাইনসহ সেবার সব ব্যবস্থা নিয়েছি। সিটি করপোরেশনসহ সবার সঙ্গে তথ্য শেয়ার করছি। তাদেরকে এডিস প্রতিরোধে সহযোগিতা করছি। আমরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করছি। কারও একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। একে অপরকে দোষারোপ না করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
ডিবিএন/এসই/ এমআরবি