মোঃলোকমান হোসেন,যশোর জেলা প্রতিনিধি:-যশোরের বেনাপোল ডুবপাড়া গ্রামে ত্রাণ বিতরণকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নয় জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (১১ই এপ্রিল) সন্ধ্যার আগে ডুবপাড়া গ্রামের বাবুর দোকানের পাশে অবস্থিত শিয়া মসজিদের সামনে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজনকে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও বাকী চার জনকে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন, (১)মিনাজুর (৫০)পিতা-মৃত আফসার আলী,(২)জাইদুল (৫০) পিতা-মৃত ওলিয়ার রহমান,(৩)মোঃ সইদুল (৪৫) পিতা-মৃত ওলিয়ার রহমান,(৪)শহিদ আলম (৪৫) পিতা-মৃত নুরুল হক,(৫)মোঃ জুলহাস(৩৪) পিতা-মৃত আলী কদর মোল্যা,ও (৬)মোঃ নাসির (৪০) পিতা-মৃত আফসার আলী।(৭)মোঃমোমিন(৫০)পিতা-মৃত কাদের ,(৮) শাহাদৎ (৫৫) পিতা-মৃত হোসেন আলী,(৯) ইব্রাহিম(৩৬),পিতা-মৃত শাহাদত।আহত ব্যক্তিরা সবাই বেনাপোল পোর্ট থানাধীন ডুবপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
সরোজমিনে তদন্ত করে জানা যায়,সূত্র-১ঃ শনিবার সকাল ৯ টার দিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান(মিজান)ডুব পাড়া মাদ্রাসার ভিতরে ত্রাণ বিতরণের তালিকার জন্য ডুবপাড়া,নটাদিঘা ও বুঝতলা
গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে উপস্থিত ছিলেন।চেয়ারম্যানের সামনেই ত্রাণ বিতরন নিয়ে ভরা মজলিসে মশিয়ার তর্ক বিতর্ক শুরু করে।
বুঝতলা গ্রামের ইসমাইল সর্দার ও ডুবপাড়া গ্রামের সাহেব আলী মীমাংস হওয়ার আহ্বান করেন।কিন্তু ডুবপাড়া গ্রামের মশিয়ার ও ইব্রাহিম মীমাংসা না হয়ে চেয়ারম্যানের সামনেই হুমকি দিতে থাকে ডুবপাড়া গ্রামে আগুন জালিয়ে দেবো।এবং এক পর্যায়ে শহিদ ও শাহজান নামের দুই ব্যক্তিকে মারধরও করেন। চেয়ারম্যান বিষয়টি ওখানে মীমাংসা না করেই ওখান থেকে চলে যান।এবং উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ নিজনিজ বাসায় চলে যান।
সূত্র-২ঃ শনিবার বিকাল ৪টার সময় ডুবপাড়া মাদ্রাসা পাড়ার জুলহাস নামের এক ব্যক্তি(ঔষধ ফার্মেসি দোকানদার)তিনি বোয়ালিয়া বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য যাচ্ছিলেন।হঠাৎ ডুবপাড়া বাবুর দোকানের সামনে শিয়া মসজিদের পাশে ওৎ পেতে থাকা (১)মমিন,(২)ইব্রাহিম, (৩)হেলাল ও(৪)তোফাজ্জেল জুলহাস কে ধরে বেধড়ক মারধর শুরু করে।জুলহাস মারখেয়ে বাড়ি চলে আসেন।কিছুক্ষণ পরে মাদ্রাসা পাড়ার জাহিদুল নামের আরেক ব্যক্তি ধান ক্ষেতে পানি দিতে যাওয়ার সময় ঐ ওৎ পেতে থাকা ব্যক্তিরা তাকেও মারার জন্য তাড়া করেন ও বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করেন।তারা হুমকিও দিতে থাকেন ওই মাদ্রাসা পাড়ার লোক যারাই এই পাড়ায় আসবে তাদেরকে মারধর করবে। পরবর্তীতে মাদ্রাসা পড়ার মিনহাজুর নামের আরেক ব্যক্তি বোয়ালিয়া বাজারে যাওয়ার সময় তাকেও ধরে বেধড়ক মেরে একটি পা ভেঙে দেয়। এ খবর মাদ্রাসা পাড়ায় ছড়িয়ে পড়লে এরাও দলবদ্ধ হয়ে ওৎ পেতে থাকা (১)মমিন,(২)ইব্রাহিম,(৩)হেলাল ও (৪) তোফাজ্জেলদের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাহাদুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান মিজান জানান,শনিবার সকালে বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ত্রাণ বিতরণের লিস্টকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আওয়ামী লীগ কর্মী মোঃমমিন একই গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী শাহজান ও শহীদকে কিল-ঘুষি মারে সকালে সেটা মিটে যায়। আমি ওখান থেকে চলে আসি।বিকালে শুনি ডুপপাড়া গ্রামের মমিন গ্রুপের লোকজন মাদ্রাসা পাড়ার কিছু লোককে মারধর করে।এ খবর মাদ্রাসা পড়ায় ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনার এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মামুন খান জানান,ডুবপাড়া গ্রামে দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেছে।এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি।