মোঃ সদরুল কাদির (শাওন): জাতীয় অধ্যাপক মরহুম ডাঃ এম আর খান সহধর্মিণী মরহুম আনোয়ারা খান এর ইন্তেকাল এর পর তার উত্তরাধিকারীদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি নিজের আপন মামা কে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে স্বপরিবারে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
তার মামা মোজাম্মেল হক ছালে খান একজন (৭০+বছর) সত্তরোর্ধ্ব শ্রবণ প্রতিবন্ধী ও এক চোখ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। তিনি মরহুম জাতীয় অধ্যাপক ডঃ এম. আর খানের একমাত্র শ্যালোক এবং মরহুম আনোয়ারা খানের এর একমাত্র ভাই।
প্রয়াত ডা. এম. আর. খান এর মেয়ে ডা. ম্যান্ডী করীম বুধবার ২০ জানুয়ারি ২০২১ইং তারিখে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, সাতক্ষীরায় উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমির অংশে তাকে কোনো ভোগ-দখলের সুযোগ দেওয়া হয়নি। সম্পত্তির দাবি করলেই প্রাণনাশের হুমকি দেন চাচাতো ভাই ইকরাম কবির খান এবং তাকে দেশত্যাগের জন্য বাধ্য করা হয়।
ডা. ম্যান্ডী করীম এর বক্তব্যের ভিত্তিতে মরহুম ডাঃ এম. আর. খান এর গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা’র রসুলপুর গ্রামে বসবাসরত তার মামা (মরহুম ডাঃ এম আর খানের সহধর্মিনী মরহুম আনোয়ারা খান এর একমাত্র ভাই) মোজাম্মেল হক ছালে খান এর সাথে যোগাযোগ করলে জানা যায় যে, ডা. ম্যান্ডী করীম কানাডা থেকে এসে টাকা দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে এবং সন্ত্রাসী বাহিনীর সাহায্যে ধানমন্ডির বাসভবন [যার ঠিকানাঃ- প্লট ২৭ (নতুন) ১২৮ (পুরাতন), হোল্ডিং-২৬, রোড-০৩, ধানমন্ডি] নিজ দখলের পাঁয়তারা করতে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় মরহুম ডাঃ এম. আর. খানের সহধর্মিনী মরহুম আনোয়ারা খানের সম্পত্তির আইন অনুযায়ী মোজাম্মেল হক ছালে খান এর মেঝ পুত্র মোঃ রাশেদ খান কে শিশুস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশন ঢাকা’তে নামমাত্র বেতনে চাকরি দেওয়া হয় এবং প্রশাসনিক পাওয়ার খাটিয়ে তাকে নিয়মিত হয়রানি করা হয়। এবং বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হয়রানিমূলক মামলায় ফাঁসিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়ে দিয়ে মানসিক ভাবে অসুস্থ রোগীতে পরিণত করেছে। এবং সুযোগ বুঝে সন্ত্রাসী বাহিনী ও প্রশাসনের সহযোগিতায় বেআইনিভাবে মোজাম্মেল হক ছালে খান এর পরিবারকে উচ্ছেদ করে এক কাপড়ে খোলা আকাশের নিচে দাঁড় করিয়ে দেয়।
সাতক্ষীরাতে আসার পরে রাশেদ খান শিশুস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশনে কাজ করছিল। এমতাবস্থায় ডা. ম্যান্ডী করীম ঘৃণ্য স্বার্থ চরিতার্থ তাকে পুনরায় যশোরে বদলি করে এবং চাকরি ছাড়তে বাধ্য করে। কারণ, ডা. ম্যান্ডী করীম এর একটাই উদ্দেশ্য ছিল তার মামার এই পরিবারকে যেকোনো মূল্যে ধ্বংস করে দেওয়া। শুধু তাই নয় তার মামা পরিবারের কিছু সম্পত্তি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের অপচেষ্টায় তার যথেষ্ট অবদান রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ডাঃ ম্যান্ডি করীম এর সহযোগীতায় কাশেমপুর মৌজার ৭ (সাত) শতক জমির দলিলটি রেজিস্ট্রি না করে অবৈধ ও দুর্নীতি করে প্রতারণার মাধ্যমে, রসুলপুর মৌজার ২ (দুই) দাগে ৩৫ (পঁয়ত্রিশ) শতক ও ২৫ (পঁচিশ) শতক মোট=৬০ (ষাট) শতক জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। সাব রেজিস্টার লূৎফর মোল্লা, দালাল খোকন, জামাই পেশকার মহিদুল ও মুহুরী শাহিন, তার ছেলে মুহুরী ফিরোজ এরা দুর্নীতি, প্রতারনা, কাগজপত্র দলিল জালজালিয়াতি করে এবং এদের যোগসাজশে ৭শতক জমির দলিল পরিবর্তন করে ৬০ (ষাট) শতক জমির দলিল তঞ্চকতা ও জালজালিয়াতি করে রেজিস্ট্রি করা হয়। ৭ (সাত) শতক জমির দলিলে যারা সাক্ষী, সনাক্তকারি ছিল তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা ৭ (সাত) শতক কাশেমপুর মৌজার জমির দলিলে সই স্বাক্ষর করেছে।
কিন্ত তারা আরও বলে, রসুলপুর মৌজার ৬০ (ষাট) শতক জমির দলিল রেজিস্ট্রি বিষয়ে কিছুই জানে না। ৬০ (ষাট) শতক রসুলপুর মৌজার জমির দলিলে কোন সই-স্বাক্ষর করেনি। তাদের নাম, সই-স্বাক্ষর সব নকল করে, জাল জালিয়াতি, প্রতারনা করে ভুয়া ও মিথ্যা অবৈধ ভাবে ৬০ (ষাট) শতক জমির দলিলটি রেজিস্ট্রি করা হয়।
মুসলিম আইন অনুযায়ী মেয়ের যেমন নানার বাড়ি সম্পত্তিতে অধিকার আছে, তেমনি বোনের সম্পত্তির উপর ভাইয়ের বা তার পূত্র সন্তানদের অধিকার থাকে। কারণ বোনের যদি কোন পুত্র সন্তান না থাকে তাহলে বোনের অন্যান্য ভাইদের পুত্র সন্তানরা ওই সম্পত্তির দাবিদার হয়। কারণ ডাঃ ম্যান্ডি করিম মরহুম ডাঃ এম. আর. খানের সহধর্মিনী মরহুম আনোয়ারা খানের একমাত্র মেয়ে।
মোজাম্মেল হক ছালে খান এর মেঝ পূত্র মোঃ রাশেদ খান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ফুফা জাতীয় অধ্যাপক মরহুম ডাঃ এম. আর. খান ও ফুফু মরহুম আনোয়ারা খান ধানমন্ডির ঐ বাড়িতে সন্তানের স্নেহ দিয়ে লালন পালন করেন। সবসময় বলতে শুনেছি তাদের যে সম্পত্তি আছে তাতে আমার মেয়ে ডা. ম্যান্ডী করীম এর মত তোরাও সমান দাবিদার। আমরা তোদেরকে কোনদিনিই প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করবো না। তোমরা সবাই আমাদের সন্তান। আমরা চাই তোমরা ভাই-বোনেরা সবাই একসাথে এই বাড়িতেই থাকবে। আমাদের মৃত্যুর পরও তোমরা আলাদা হবে না। একে অপরের সুখে দুঃখে একসাথেই বসবাস করবে। এ বিষয়টি ডা. ম্যান্ডী করীম ও জানে।
কারণ ডাঃ এম আর খান ও আনোয়ারা খান এর সন্তান তার বাবা-মায়ের প্রতি কোন দায়িত্ব পালন তো দুরের কথা, কোনদিন খোঁজও নেয়নি। শুধু তাই নয়, ডাঃ ম্যান্ডী করীম এর স্বামী রেজাউল করিম (রেজা) কে মরহুম ডাঃ এম আর খান পছন্দ করতেন না। জামাতাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব দিয়ে আবার ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। জামাতা’র বিভিন্ন সময়ের করা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আগে থেকেই তিনি জানতেন। তাই মরহুম আনোয়ারা খান এর একমাত্র ভাই মোজাম্মেল হক ছালে খান এর সন্তানদের নিয়ে পিতা-মাতার মত লালন পালন করেছেন। এবং সন্তানের শূণ্যতা পূরণ করেন।
ডাঃ এম আর খান ও আনোয়ারা খান এর জীবাদ্বশায় মোজাম্মেল হক ছালে খান এর বড় ছেলে রেজাউল হক খান রাজু’কে রাজধানীর উত্তরায় একটি বাসভবন করে দেন। যেহেতু তাকেও সন্তানের ন্যায় লালন পালন করেছেন।
কিন্তু ডাঃ এম. আর. খান ও আনোয়ারা খান এর ইন্তেকাল এর পর শুরু হয় নতুন নাটক। তাদের একমাত্র মেয়ে ডাঃ ম্যান্ডী করীম কানাডা থেকে দেশে ফিরে মোজাম্মেল হক ছালেলে খান এর সন্তানদের সন্ত্রাসী বাহিনী ও প্রশাসনের সহযোগিতায় বেআইনিভাবে ধানমন্ডির বাসভবন থেকে উচ্ছেদ। এবং ঢাকা ছাড়তে বাধ্য করে।
পরবর্তীতে জানা যায়, ডাঃ ম্যান্ডী করীম তার একমাত্র মামা মোজাম্মেল হক ছালে খান কে অস্বীকার করে আদালতকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ভুয়া ও মিথ্যা ওয়ারিশ কাম সার্টিফিকেট তৈরি করে এবং বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিজ হেফাজতে নেন। ডাঃ ম্যান্ডী করীম এর এই ঘৃণ্য প্রচেষ্টার কথা জানার পর মামা মোজাম্মেল হক ছালে খান নিজ দুলাভাই জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ এম আর খান ও তার বড় বোন আনোয়ারা খান এর মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে চুপচাপ ছিলেন।
ডাঃ ম্যান্ডী করীম এর ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের ফলে মোজাম্মেল হক ছালে খান এর পরিবার যখন দিশেহারা তখন কোন উপায় না পেয়ে বিজ্ঞ আদালতের স্মরনাপর্ণ হন। বর্তমানে ডাঃ ম্যান্ডী করীম বিভিন্ন উপায়ে ঐ মামলা টিতে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। তিনি এক এক সময়ে এক এক ধরনের কথা বলে। এদিকে নিজের মামার নাম বাদ দিয়ে ভুয়া ওয়ারেশ কাম সার্টিফিকেট এর বুনিয়াদে মরহুম আনোয়ারা খান এর ইন্তেকাল এর পর থেকে সম্পত্তি আত্মসাত করে আসছে এবং অন্যান্য সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টায় লিপ্ত।
কিন্তু প্রয়াত ডা. এম. আর. খানের মেয়ে ডা. ম্যান্ডী করীম বুধবার ২০ জানুয়ারি ২০২১ ইং তারিখে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে যে অভিযোগ করেন তার ভিতরে তিনি মামা মোজাম্মেল হক ছালে খান এর বিষয়টি গোপন করে যান। তিনি নিজেই তাদের (মোজাম্মেল হক ছালে খান এর পরিবার) সম্পত্তি আত্মসাত করে নিজেই কাকে (???) দোষারোপ করছে। বিষয়টি উদুর পিন্ডি বুদুর ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার মত দেখাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে আরোও জানা যায়, প্রয়াত ডা. এম. আর. খানের মেয়ে ডা. ম্যান্ডী করীম তার আপন চাচাতো ভাই সাতক্ষীরা নিবাসী একরামুল কবির খান বাবু (বাবু খান) এর সাথে সম্পত্তির মামলা চলমান।
ডাঃ ম্যান্ডী করীম এর কাছে মরহুম জাতীয় অধ্যাপক ডঃ এম. আর. খান এর একমাত্র শ্যালোক এবং মরহুম আনোয়ারা খানের এর একমাত্র ভাই মোজাম্মেল হক ছালে খান দুইটি প্রশ্ন রেখেছেন সেটি হলো,
১) ডাঃ ম্যান্ডী করীম আপনি যখন কানাডা ছিলেন তখন আমার সন্তানরা আপনার বাবা-মায়ের কাছে কি পরিচয়ে ছিল?
২) আপনার নানা ইসহাক খান এর সন্তান মোজাম্মেল হক ছালে খান আপনার কি হয়?
৩) আপনার বাবা-মায়ের গোরস্থান এর জন্য জায়গা কে দিয়েছে?
পরবর্তীতে ডাঃ ম্যান্ডী করীম এর সাথে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এজন্য তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নি।
মোজাম্মেল হক ছালে খান এর ব্যক্তিগত আইনজীবী এ্যাড. টি এম শাকিল হাসান জানান, এম. আর. খান এর মৃত্যুর পরে তার কন্যা সংবাদ সম্মেলনকারী ম্যান্ডী করীম নিজেকে এম. আর. খান এবং মিসেস খানের একমাত্র ওয়ারিশ দেখিয়ে সাকসেসন সার্টিফিকেট বের করেন, যা সম্পূর্ণ রুপে জালিয়াতি এবং সেটা বাতিলের জন্য মামলা চলমান।
কিন্তু ম্যান্ডী করীমের বারংবার সময় নেওয়ার কারণে মামলাটি শেষ হচ্ছে না। জাল সাকসেসন সার্টিফিকেট দেখিয়ে একদিকে এম. আর. খান এর কন্যা ম্যান্ডী করীম ঢাকার সমস্ত সম্পত্তি এককভাবে বেচা-বিক্রির চেষ্টা করছেন অন্যদিকে, সাতক্ষীরাতে তাঁর মামা (মোজাম্মেল হক ছালে খান) এর প্রাপ্য অনেক জমি বিক্রি করে টাকা পয়সা নিয়ে এসেছেন।
এককথায়, এম. আর. খান এর একমাত্র কন্যা ম্যান্ডী করীম জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তাঁর বাবা-মায়ের অন্যান্য ওয়ারিশদের বঞ্চিত করে সমস্ত সম্পত্তি একাই হাতিয়ে নিতে চাচ্ছেন এবং সেজন্য বাবার পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন লেভেলের উচ্চপদস্থ মানুষদের ভুল বুঝিয়ে সহানুভূতিশীল করার মাধ্যমে এম. আর. খান ও তাঁর স্ত্রীর বৈধ ওয়ারিশদের নানাভাবে নির্যাতন করছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারের সদস্যরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন যে, এই বিষয় টি নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে মুজিব বর্ষে একটি অসহায় পরিবার কিছু টা হলেও আলোর মুখ দেখবে।