হুমায়ুন কবির, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী স্থাপনের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। এরই মধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ খবর শোনার পরপরই ঠাকুরগাঁওয়ের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে এ জেলার নারী উদ্যোক্তারা বড় ধরনের স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলের বিভিন্ন প্রকার খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে নতুন রূপে সারা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করবে ঠাকুরগাঁও জেলাবাসী।
জেলার বিসিক শিল্পনগরী সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের আকচা মৌজার ৫০ একর জায়গায় ৯৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)। একটি নির্দিষ্ট স্থানে পরিবেশবান্ধব শিল্প কমপ্ল্যায়ান্স সমৃদ্ধ আধুনিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপনের মাধ্যমে ২৪৯টি শিল্প প্লট তৈরি করে প্রায় ২৩০টি শিল্প ইউনিট স্থাপনের ব্যবস্থা করা হবে। যেখানে ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া এখানে নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১০ শতাংশ হিসেবে ২৫টি শিল্প প্লট সম্ভাবনাময় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ রাখা হবে।
ঠাকুরগাঁও বিসিক শিল্পনগরীর উপব্যবস্থাপক নুরেল হক বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষিভিত্তিক একটি এলাকা। এ জেলায় অনেক ধরনের ফসল উৎপাদন হয়। যেমন গম, সূর্যাপুরী আম, আলু, মরিচ, দুধ, চিজ, পনির, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টা ইত্যাদি ফসলের আশাতীত ফলন হয়। এই পণ্যসামগ্রী দিয়ে অনেক রকমের খাদ্যসামগ্রীর চাহিদা পূরণ হয় এ জেলা থেকে। বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরীতে ৫০ একর জমিতে ২৪৯ শিল্প প্লট থাকবে। এরই মধ্যে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ চূড়ান্ত হয়েছে। তার মাধ্যমে আরো জেনেছি দ্রুততার সঙ্গে ভূমি অধিগ্রহণ ও অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হবে। যেহেতু এটি খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী, সেহেতু খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে জড়িত তা যাচাই-বাছাই করে বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জেনেছি।
ঠাকুরগাঁও উইমেনস চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ও অন্যতম নারী উদ্যোক্তা চন্দনা ঘোষ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এটা ঠাকুরগাঁওয়ের জন্য অনেক বড় একটি সুখবর। এর মধ্যে জেলার পিছিয়ে পরা নারীরা এগিয়ে আসবেন এবং অনেক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে।
জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, জেলাবাসীর জন্য এটি একটি বড় সুখবর। বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী স্থাপন হলে একটি পরিকল্পিত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হবে। এতে করে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার মাধ্যমে জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে এ অঞ্চলের খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে। সর্বোপরি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল হিসেবে ঠাকুরগাঁও একদিন সুপরিচিত একটি জেলায় রূপান্তর হবে।
প্রসঙ্গত: নতুন করে ৯৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী প্রকল্পটির অনুমোদন হলো। যেটি বাস্তবায়ন করবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প কর্পোরেশন।