সর্বনিম্ন ৭০০ টাকায় ঢাকা থেকে যাওয়া যাবে কক্সবাজার। প্রতিদিন রাজধানী থেকে ছাড়বে ১০ জোড়া পর্যটক ট্রেন। বছরে প্রায় ২ কোটি যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা নিয়ে পর্যটন নগরীতে নতুন বছর চালু হচ্ছে ঝিনুক আকৃতির রেলস্টেশন।
এই ঝিনুক আকৃতির স্টেশন চালু হলে ঢাকা থেকে মাত্র ৮ ঘন্টায় সমুদ্র নগরীতে পৌঁছানো যাবে। আর চট্টগ্রাম থেকে যেতে সময় লাগবে মাত্র আড়াই ঘণ্টা। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছেন, ট্রেনে ঢাকা থেকে কক্সবাজার চলাচলে সর্বোচ্চ টিকিটের মূল্য হবে ১৫০০ টাকা।
এশিয়ার একমাত্র পর্যটন স্টেশন চালু হলে এই ট্রেন দেখতে অনেক মানুষ ছুটে আসবেন কক্সবাজারে। আবার যাতায়াত সহজ হওয়ায় সমুদ্র নগরীতে বাড়বে কয়েক গুণ পর্যটক।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত যে রেলপথ নিয়ে সবার অপেক্ষা, সেই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এই রেলস্টেশন। ছয় শতাধিক শ্রমিক ও প্রকৌশলীর শ্রমে চার বছরে এটি এখন দৃশ্যমান। চারদিকে চলছে গ্লাস ফিটিংস, ছাদের স্টিল ক্যানোফি আর নানা ধরনের ফিটিংস বসানোর কাজ।
প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, এ ধরনের স্টেশন বাংলাদেশে এটিই প্রথম। এমনকি আমাদের উপমহাদেশেও এখন পর্যন্ত এমন কোনো স্টেশন নেই। এই রেলস্টেশন চালু হলে বিদেশি পর্যটকের আগমন বাড়বে।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
স্টেশনটি অনেকটা উন্নত বিশ্বের কোনও বিমান বন্দরের মতো। ভবনের নিচতলায় আছে টিকিট কাউন্টার, লকারসহ নানা সুবিধা। দ্বিতীয় তলায় শপিংমল, রেস্তোরাঁ। তিন তলায় আছে তারকামানের হোটেল, যেখানে ৩৯টি রুমে থাকার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা।
এই স্টেশনটি ২৯ একর জমির উপর ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে এই স্টেশন। যার সম্পূর্ণ ফ্লোর এরিয়া ধরা হচ্ছে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫ বর্গফুট। যেখানে প্রতিদিন যাওয়া আসা করতে পারবেন প্রায় ১ লাখ যাত্রী। বিশ্বের সকল পর্যটকের কথা মাথায় রেখে নান্দনিকভাবে স্টেশনটিকে সাজানো হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাংলাদেশে এ ধরনের স্টেশন আমাদের জন্য খুবই গর্বের বিষয়। এর মধ্য দিয়ে ঢাকা ও কক্সবাজার যাতায়াতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।
ঢাকা থেকে প্রতিদিন ১০ জোড়ার পাশাপশি চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি ও লোকাল মিলে আরো বেশ কিছু ট্রেন যাবে কক্সবাজার। পর্যটকবাহী এক একটি ট্রেনে থাকবে ৮০০ থেকে ১২০০ যাত্রী। সবমিলিয়ে এ রেলপথে বছরে যাত্রী আসা যাওয়া করবে প্রায় ২ কোটি।
মফিজুর রহমান রহমান আরও বলেন, আন্তঃনগর পর্যটকদের জন্য আমরা প্রায় ১০ জোড়া আধুনিক ট্রেন চালাবো। এছাড়া সবার জন্য লোকাল ট্রেন থাকবে।
চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেলপথে এটিসহ মোট নয়টি স্টেশন থাকবে। যার মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতির যোগসূত্র তৈরি হবে। স্টেশন ঘিরে হোটেল-মোটেল ও পরিবহন খাতে তৈরি হবে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। সমৃদ্ধ হবে আশপাশের কয়েক কিলোমিটারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
উক্ত প্রকল্পের পরিচালক বলেন, ব্যবসায়ী বা শিল্পপতিরা তাদের পণ্য ঢাকা থেকে কম খরচে কক্সবাজারে নিয়ে যেতে পারবেন। কারণ সাধারণ যানবাহনে খরচ দ্বিগুণ।
চলতি বছরে সব কিছু ঠিক থাকলে, বিশ্বমানের এ স্টেশনের যাত্রী হওয়ার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা।
ডিবিএন/ডিআর/মাহমুদা ইয়াসমিন