ঢাকা-মাওয়া সড়কের টোল প্লাজায় বাস চাপায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুর্ঘটনার বিষয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন উল্লেখ করে মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের পক্ষে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে ই-মেইলে নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।
নোটিশে বলা হয়, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মানুষের জীবনধারণের অধিকার অন্যতম একটি মৌলিক অধিকার। বাস মালিক, ড্রাইভার, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং হাইওয়ে পুলিশের চরম অবহেলার কারণেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এসব মৃত্যু ঘটেছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, বাসের ফিটনেস সনদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল বাসের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা এবং সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা। এছাড়া, হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্ব ছিল বাসটির ফিটনেস পরীক্ষা করা এবং ড্রাইভারের লাইসেন্স বৈধ কিনা তা নিশ্চিত করা।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ব্যাপারী পরিবহনের বাসটি ফিটনেস সনদহীন ছিল এবং ড্রাইভারের লাইসেন্সও মেয়াদ উত্তীর্ণ ছিল। এছাড়া, ড্রাইভার নিজেই স্বীকার করেছেন যে তিনি ক্যানাবিস নামক মাদক সেবন করতেন। ফলে, এটি স্পষ্ট যে বাসের ফিটনেস প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ এবং ড্রাইভারের লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বাসের মালিকও বেআইনি ও অবহেলায় ফিটনেসবিহীন বাস রাস্তায় নামিয়েছিলেন এবং বৈধ লাইসেন্স ছাড়া ড্রাইভারকে দিয়ে বাস চালাতে দিয়েছিলেন। এর ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে ৬ জন মানুষ নিহত হয়েছেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একান্ত কর্তব্য ছিল। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং এতে নিহতরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ফলে, তাদের পরিবারের সদস্যরা সারা জীবন এই ক্ষতির শিকার হবেন। সুতরাং, নিহতদের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
এছাড়া, ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে ফিটনেসবিহীন যানবাহনের তালিকা প্রস্তুত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। নোটিশে আরও বলা হয়েছে, এই বিষয়ে গৃহীত অগ্রগতি পাঁচ দিনের মধ্যে নোটিশদাতাকে জানাতে হবে। যদি এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় ব্যাপারী পরিবহনের একটি বাস অপেক্ষমাণ যানবাহনকে চাপা দিয়ে ৬ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম