তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সাথে সমঝোতা বৈঠকের পর শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া, জেরিনসহ বিভিন্ন বাগানের শ্রমিকরা কাজে ফিরছে।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) শ্রমিকরা বলছেন, আমাদের মাঝে ডিসি, এসপিসহ সবাই এসেছেন। আমরা খুশী হয়ে আজ কাজে ফিরছি।
ভাড়াউড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি নুর মোহাম্মদের সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রশাসনের আশ্বাসে আমরা শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বাগানে পাঠিয়েছি। এখন থেকে প্রতিদিন শ্রমিকরা কাজ করবে।
ভাড়াউড়া চা বাগানের শ্রমিক পঞ্চায়েতের জয় নারায়ন হাজরা জানান, দীর্ঘ কর্মবিরতির কারণে শ্রমিকরা হতাশ হয়ে পড়েছে। নানাবিধ সমস্যার মধ্যে শ্রমিকড়া পড়েছে। আমরা কোন রাজনতিতে নাই, চা শ্রমিকরা নিরীহ অবহেলিত মানুষ। ডিসি, এসপি তাদের কে প্রধানমন্ত্রী পাঠিয়েছে তাই আমরা আজ থেকে কাজে নেমেছি।
এদিকে পনেরো দিন কর্মবিরতির কারণে শ্রমিকরা আর্থিক সমস্যায় অনেকেই পানি খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। কোন দোকানদার তাদের বাকী মালামাল দিচ্ছেনা। এঅবস্থায় মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকাল থেকে ভাড়াউড়া চা বাগানের দুর্গা মন্দির এলাকায় জড়ো হতে থাকে। তারপর তাঁরা ডিসি এসপির জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। বেলা বারোটায় ডিসি ও এসপি আসলে শ্রমিকদের মধ্যে খুশীর জোয়ার বয়ে যায়। এরপর শ্রমিকরা তাদের দাবি দাওয়াসহ দুঃখ কষ্টের কথা তুলে ধরে ভাগিভাগি করে। জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহ্সান তখন তাঁদের কথা শুনে শ্রমিকদের নিরাপত্তাসহ সব সহযোগিতার জন্য আশ্বাস দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বাংলাদেশীয় চা সংসদের সার্কেল চেয়ারম্যান (সিলেট জোন) গোলাম মোহাম্মদ শিবলিসহ অনেকেই। এরপর বেলা ১টার দিকে শ্রমিকরা স্বতস্ফুর্তভাবে চা বাগানে কাজে যোগ দেয়।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহ্সান বলেন, আমরা আশা রাখছি শ্রমিকরা কাজে ফিরবে। কোন ষড়যন্ত্রই তাঁদের রুখতে পারবেনা। তিনি বলেন, আমরা শ্রমিকদের সব ধরনের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবো বলে জেলা প্রশাসক জানান।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, এখন বাগানগুলোতে চা শ্রমিক ইউনিয়ন, বিভিন্ন ভ্যালি, বাগান পঞ্চায়েত কমিটিসহ অনেক ছোট ছোট নের্তৃত্ব রয়েছে। শ্রমিকরা মূলত পঞ্চায়েত কমিটির নির্দেশেই বাগানে কাজ করতে যায়। সেই শ্রমিকরা চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্দেশনা মানছেনা।
গতকাল সোমবার বিকেলে কাজে না যাওয়ার জন্য বিভিন্ন বাগান থেকে খন্ড খন্ড মিছিল বের হয়। এর ফলে আজ অনেক বাগানের শ্রমিকরাই কাজে যোগ দেয়নি। এমন অবস্থায় সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে চরম হতাশা,ভয় বিরাজ করছে। আজ কর্মবরতির ১৫তম দিন। সাধারণ শ্রমিকরা পড়েছেন বিপাকে। চরম হতাশা বিরাজ করছে তাদের মাঝে। ঘরে খাবার নেই, দোকানগুলো বাকীতে মাল দিচ্ছেনা। অনেকেই শুধু পানি খেয়ে দিন পার করছে। তারা কাজে যেতে চাওয়ার খুব ইচ্ছে কিছু ভড় ও হতাশার জায়গাগুলো থেকে কাজে যায়নি সাধারণ শ্রমিকরা।