নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রফতানি আয় বেড়েছে ২৩ দশমিক শূন্য ৬ মিলিয়ন (২ কোটি ৩০ লাখ ৬০ হাজার) ডলার। গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. আব্দুল লতিফ বকসী জানান, রফতানি বাণিজ্যে ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ; গত বছরের জুলাই মাসের তুলনায় এ বছর রফতানি আয় বেড়েছে ২৩ দশমিক শূন্য ৬ মিলিয়ন ডলার- এটি তারই ইঙ্গিত।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) মঙ্গলবার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৩৯১ কোটি (৩.৯১ বিলিয়ন) ডলার আয় হয়েছে।
এই অঙ্ক গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। জুলাই মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ছিল ৩৪৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
এর মধ্য দিয়ে সাত মাস পর বাংলাদেশ রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধিতে ফিরে এসেছে। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল রপ্তানি আয়ে। এর পর ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধি কমছিল।
কোভিড-১৯ মহামারীর ধাক্কা বাংলাদেশে লাগতে শুরু করে গত মার্চ মাস থেকে, এপ্রিলে রপ্তানি কমে মাত্র ৫২ কোটি ডলারে নেমে এসেছিল, যা ছিল রেমিটেন্সের চেয়েও কম।
এপ্রিল মাসে গত বছরের এপ্রিলের চেয়ে রপ্তানি আয় কমেছিল ৮৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। বিধিনিষেধ শিথিল করে কলকারখানা চালুর পর মে মাসে রপ্তানি বেড়ে ১৪৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলারে দাঁড়ায়; তবে প্রবৃদ্ধি কমেছিল ৬১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে রপ্তানি আয় বেড়ে ২৭১ কোটি ৪৯ লাখ ডলারে উঠলেও প্রবৃদ্ধি কমেছিল ২ দশমিক ৫ শতাংশ।
ইপিবির তথ্যে দেখা যায়, জুলাই মাসে রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প থেকে ৩২৪ কোটি ৪৯ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ।
অর্থাৎ মোট রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশই এসেছে পোশাক খাত থেকে। জুলাই মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কম হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। জুলাইয়ে উভেন পোশাক রপ্তানি ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমলেও নিট পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
এদিকে, পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। জুলাই মাসে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে ৩৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৮৮ কোটি ২৩ লাখ ডলার আয় করেছে, যা ছিল আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।
করোনা মহামারীকালে ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে ৪৯ শতাংশ। হিমায়িত মাছ রপ্তানি বেড়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশ। কৃষি পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৩১ শতাংশ। হ্যান্ডিক্রাফট রপ্তানি বেড়েছে ৫৭ দশমিক ২২ শতাংশ।
তবে চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। স্পেশালাইজড টেক্সটাইল রপ্তানি কমেছে ২৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ।