মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলায় বন বিভাগের পর্যাপ্ত নজরদারির অভাবে সংরক্ষিত বন দখল করে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টের পাশাপাশি বন পড়ছে হুমকির মুখে।
সুত্রে জানা গেছে, ৫৬৩১.৪০ হেক্টর এলাকা নিয়ে বিস্তৃত লাঠিটিলা সংরক্ষিত বন এলাকায় হতে যাচ্ছে দেশের তৃতীয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্ক। সেই জায়গায় বন বিট এলাকার হায়াছড়ার মৃত সিকান্দর আলীর ছেলে আব্দুর রহমান বেশ কয়েকদিন থেকে বনের জায়গা দখল করে মাটি খনন করে তৈরি করছেন পুকুর। পুকুর তৈরির করে চারপাশে সিমেন্টের ২৫-৩০ খুঁটির সাথে জাল দিয়ে পুকুরের সীমানা নির্ধারণও করেছেন তিনি।
এদিকে লাঠিটিলা সংরক্ষিত বন বিট কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুকুর খননে বাঁধা দিয়ে পুকুর খননে ব্যবহৃত জিনিসপত্র জব্দ করেন। তবে পুকুর খননকারী ব্যক্তির ভাই মুঠোফোনে বলেন, বিট কর্মকর্তা পরে পুকুর করার সুযোগ করে দেবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। বাঁধা প্রদানকালে পুকুরের চারদিকের খুঁটিসহ বেড়া অক্ষত অবস্থায় রেখে এসেছেন বিট কর্মকর্তা।
অন্যদিকে, এটাকে লোকদেখানো অভিযান বলছেন স্থানীয়রা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বন এলাকায় ৪০/৫০ টি পুকুর রয়েছে। এসব পুকুরের কয়েকটি আগে থেকে থাকলেও নতুন করে অনেকে তৈরি করছেন। নতুন করে যারা বন দখল করে পুকুর খনন করছেন তারা বন বিভাগকে ম্যানেজ করেই সবকিছু করছেন। বন বিভাগ লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করলেও অনৈতিক সুবিধা পেলে তাদের কাছে সবই সম্ভব। বন দখলের প্রাথমিক পর্যায়ে কর্মকর্তারা বাঁধা দিলেও পরে আর এ বিষয়ে খবর না রাখায় বন দখল করে অনেকেই ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করছে। এতে করে দিন দিন বন তার জৌলুস হারাচ্ছে।
এ ব্যাপারে পুকুর খনন কারী আব্দুর রহমানের ছোট ভাই আব্দুর রহিম মুঠোফোনে বলেন, পুকুর খনন করার খবর পেয়ে বিট কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন এসে বাঁধা দিয়ে কোদাল ও টুরকি নিয়ে যায়। তবে তিনি এখনও ঐ স্থানে জালের বেড়াসহ খুঁটি রয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
এ সময় তিনি আরোও বলেন, বিট কর্মকর্তা বর্তমানে পুকুর খননে কিছু সমস্যা আছে বললেও পরে পুকুর করার সুযোগ দেবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
লাঠিটিলা সংরক্ষিত বন বিটের বিট কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, বনের জায়গায় পুকুর খননের খবর পেয়ে খননে ব্যবহৃত কোদাল, মাটির টুরকি, খুন্তি জব্দ করে নিয়ে আসি। তবে তিনি এখনও পুকুরের চারদিকে জালের বেড়া রয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, এ বিষয়টি খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মূলত এখানে বনের জমি কেটে উঁচু নিচু করা হয়েছে। তবে তাদের উদ্দেশ্য ভবিষ্যতে পুকুর করা। আমরা জমিটি ইতিমধ্যে ভরাট করার নির্দেশনা দিয়েছি। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।