জাতীয় পার্টির জাতীয় সম্মেলনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সহধর্মিণী রওশন এরশাদ।
এতে মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন কাজী মামুনুর রশীদ। এ ঘোষণার আগে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি নেন রওশন এরশাদ।
শনিবার (০৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠান জাতীয় সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জাপার কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ।
পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে রওশন এরশাদের নাম ঘোষণা করলে উপস্থিত কাউন্সিলর ও ডেলিকেটরা দুহাত উঠিয়ে তা সমর্থন জানান। এরপর প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর দলের অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের নাম ঘোষণা করেন।
এরমধ্যে কাজী ফিরোজ রশিদকে নির্বাহী চেয়ারম্যান, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান এবং সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, আল মাহগির শাদ এরশাদ, গোলাম সারোয়ার মিলন ও সুনীল শুভ রায়কে কো-চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এই নাম ঘোষণার পর উপস্থিত কাউন্সিলর ও ডেলিকেটদের কাছে মহাসচিব হিসেবে কাজী মামুনুর রশীদের নাম ঘোষণা করেন গোলাম সারোয়ার মিলন। এতে উপস্থিত সবাই তা সমর্থন করেন।
এর আগে শনিবার (৯ মার্চ) রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির একাংশের জাতীয় সংগীত এবং দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়।
শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মৃধা। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় পুরো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটসহ মৎস্যভবন এবং শাহবাগ এলাকা।
নানা রংবেরঙের পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে সম্মেলনস্থল, সড়কদ্বীপগুলোতে লাগানো হয়েছে এরশাদ শাসনামলের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন।
নির্মাণ করা হয়েছে দ্বিতল বিশিষ্ট মঞ্চ। ১২ হাজারের কাউন্সিলর এবং ডেলিগেট উপস্থিতির লক্ষ্য চূড়ান্ত করে সম্পন্ন করা হয়েছে সকল আয়োজন। প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সহধর্মিণী রওশন এরশাদের উপস্থিতিতে এতে সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা।
সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা পার্টির সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, সাবেকমন্ত্রী এবং জাপার একাংশের মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামি ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এমএ মতিন, বিএলডিপি চেয়ারম্যান এম নাজিম উদ্দীন আল আজাদ।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে কোন্দলের মাত্রা চরমে ওঠে। নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা সরাসরি পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে সভা ডেকে ফল বিপর্যয়ের জন্য দোষারোপ করেন। তাদের পদত্যাগও চান পরাজিত প্রার্থীদের অনেকেই। এ ঘটনা কেন্দ্র করে দলে থাকা দীর্ঘদিনের মিত্রদের একে একে বহিষ্কার করেন জিএম কাদের। এর মধ্যে গত ২৮ জানুয়ারি জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে জাপার স্বঘোষিত চেয়ারম্যান হন রওশন এরশাদ।
মূলত রওশন অংশে তিনি ছাড়া বাকি শীর্ষ নেতাদের সবাই দল থেকে বহিষ্কৃত। বহিষ্কৃত নেতাদের হাতে নিয়েই নতুন করে দল গঠন করতে যাচ্ছেন সাবেক এই বিরোধী দলের নেতা। যদিও দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রওশনকে এখনো বহিষ্কার করেননি জিএম কাদের।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম