মো:আমিন আহমেদ, সিলেট প্রতিনিধি: সিলেট নগরীতে ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করার অভিযোগ উঠেছে এক শিল্পপতি বাবার বিরুদ্ধে। মামলাটি মিথ্যাবলে অভিযোগকারী আজহারুল ইসলাম মুমিন জানান, ঘটনার সূত্রপাত আজহারুল ইসলাম মুমিন লন্ডন থাকাকালীন সময়ে শহরে তার নিজ নামীয় ২৬ শতক জমি একটি প্রাইভেট ব্যাংকের কাছে বন্ধক রেখে ৫০ কোটি টাকা লোন নেন তার পিতা সিলেটের বিশিষ্ট শিল্পপতি নজরুল ইসলাম বাবুল।
বিষয়টি প্রবাসে থাকাকালীন সময়ে মুমিন জানতে পারেন। তাই তিনি দেশে আসেন। দেশে আসার পর হোম কোয়ারেন্টিন থেকে বের হয়ে মুমিন গত ৭ই মার্চ সোমবার রাতে তাদের ফিজা অ্যান্ড কোং (প্রা.) লি. কোম্পানীতে গিয়ে তার বাবার কাছে জানতে চান, তাকে না জানিয়ে কেনো তার মালিকানাধীন জায়গা ব্যাংকে বন্ধক দিয়ে এত টাকা লোন নিলেন? প্রবাসে থাকাকালীন সময়ে কেনো তার স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংকের সাথে প্রতারণার করে এতো টাকা নিলেন? আর এতে করেই পিতার সাথে পুত্রের বিবাদের সৃষ্টি হয়বলে গনমাধ্যমকে জানান সিলেটের শিল্পপতি নজরুল ইসলাম বাবুলের পুত্র আজহারুল ইসলাম মুমিন।
নিজের বিরুদ্বে দায়েরকৃত মামলাটি মিথ্যা বলে আজহারুল ইসলাম মুমিন বলেন আমি লন্ডন প্রবাসী । গত ক’দিন পূর্বে আমি দেশে বেড়াতে আসি। মুমিনের আরেক পরিচয়; তিনি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক, ফিজা অ্যান্ড কোং(প্রা.) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও একাত্তরের কথা পত্রিকার প্রকাশক শিল্পপতি নজরুল ইসলাম বাবুলের ২য় ছেলে। করোনাকালীন সময়ে দেশে আসার পর ক’দিন হোটেল লা রোজে হোম কোয়ারেন্টিনের ছিলেন। প্রবাস ফেরত মুমিন জানান আমিসহ দুই জনের নামোল্লেখ, করে আরো অজ্ঞাত ১২ জনকে আসামি করে গত ৮ মার্চ সোমবার এসএমপির কোতোয়ালি থানায় ৫ লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন আমার ক্ষমতাবান শিল্পপতি বাবা ।
তবে এসকল অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে আজহারুল ইসলাম মুমিন বলেন, গত সপ্তাহে বাবা আমাকে ফোন করে বলেন তার সাথে কার যেনো ঝামেলা হচ্ছে। আমি তখন গাড়ি নিয়ে দ্রুত চলে যাই বাবার তালতলাস্থ সিলভেলি টাওয়ারের বাসায়।
বাসার সামনে গিয়েই দেখলাম রড হাতে কয়েকজন যুবক দাঁড়িয়ে আছে। আমি বাবার কাছে যেতেই বাবা উনার বন্ধুক দিয়ে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েন। বিষয়টি আমি বুঝতে পেরেই ঘটনাস্থল থেকে গাড়ি নিয়ে চলে আসি। পরে গত বুধবার জানতে পারলাম, আমার নামে বাবা ছিনতাই মামলা করেছেন।
মামলার এজহারে বলা হয়েছে-মুমিন মাদক সেবন, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত বলে!
নজরুল ইসলাম বাবুল। তিনি নিজেই বাদী হয়ে তার ২য় ছেলে আজহারুল ইসলাম মুমিনসহ দুই জনের নামোল্লেখ, আরো অজ্ঞাত ১২ জনকে আসামি করে এসএমপির কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন! মামলা নং-২১(০৮/০৩/২১)।
মুমিন বলেন বাবা মামলায় উল্লেখ করেছেন, আমি তাকে তিন রাউন্ড গুলি করছি। এই তথ্য এটি একদম মিথ্যা। বরং পূর্বপরিকল্পনা করে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাবা তিন রাউন্ড গুলি করেন। বাবার তালতলাস্থ সিলভেলি টাওয়ারের বাসা এবং পার্কিংয়ে অন্তত ২০/২৫ সিসি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। ফুটেজ দেখলে সব সত্যতা জানবেন।
মামলায় আরো উল্লেখ করেছেন, আমি নাকি ফিজা এন্ড কোম্পানির শোরুম থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে আসছি। এই তথ্যটাও মিথ্যা। মেন্দিবাগস্থ শোরুমের কথা উল্লেখ করেছেন, সেই শোরুমে অন্তত ৪০ টির মত সিসি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। বাবা তার গল্পকাহিনী আড়াল করতে এরকম গল্প সাজিয়েছেন। সঠিক তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে ।
এ ব্যাপারে ফিজা অ্যান্ড কোং (প্রা.) লি. ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিলেটের শিল্পপতি নজরুল ইসলাম বাবুলের সাথে যোগাযোগ করতে তার ব্যবহৃত মুঠোফনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ছেলের বিরুদ্ধে মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এসএমপির কোতোয়ালি থানার ওসি এসএম আবু ফরহাদ।এদিকে পিতার দায়ের করা আলোচিত এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শেখ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, মামলা দায়েরের পর পুলিশ আসামি সামীর বাসায় অভিযান ও তল্লাশি চালালেও তাকে পায় নি। পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।