তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেলের বিরুদ্ধে এবার খোদ অভিভাবক সংগঠন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক’কে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সাবেলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ জরুরী সভা করেছেন।
এ নিয়ে দলের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাকে দল থেকে বহিষ্কার না করলে গণ পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। অপরদিকে সাহাব উদ্দিন সাবেলের এধরণের আচরনের প্রতিকার চেয়ে জেলা আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেলের নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে ইতিপূর্বে অনেকবার তিনি গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছেন। বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দেওয়াই যেন মুল কাজ ও ওই ছাত্রলীগ নেতার।
উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের অভিযোগের বারাতের সুত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বিতর্কিত একটি বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে আসেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেল, সাধারন সম্পাদক ইকবাল ভূইয়া উজ্জ্বল, জুড়ী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আদনান আশফাক, সাধারন সম্পাদক গৌতম দাস। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুক মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফুলতলা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুক আহমদসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে সেখানে সংবাদ সম্মেলন করতে নিষেধ করেন। এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেল ক্ষীপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে তুই তুকারি করে অশালীন আচরণ করেন। এরপর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদকে ছাত্রলীগর সভাপতি সাবেল অসদাচরণের সাথে লাঞ্ছিতও করেন।
এ ঘটনায় রাতেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসায় বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মাসুক মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন লেমন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল ইসলাম কাজল, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক কিশোর রায় চৌধুরী মনি, সদস্য শেখরুল ইসলামসহ যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ। সভায় ছাত্রলীগের সভাপতির এমন কর্মকান্ডে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে। এর প্রতিকার চেয়ে জেলা আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের কাছে অভিযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ জানান, ছাত্রলীগের সভাপতি কয়েক জন সিনিয়র নেতাসহ তার সাথে যে অসদাচরণ করেছে তা অত্যন্ত নিন্দার, ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। বুধবারও সে যুবলীগের এক সিনিয়র নেতার সাথে বেয়াদবি করেছে। পরে আমরা তা সমাধান করে দেই। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় রাতেই উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ জরুরী সভা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে গতকাল পর্যন্ত সাহাব উদ্দিন সাবেলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। বারবার ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ না করে কেটে দেন কোন রকম বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এর আগে প্রবাসে বসে একটি ছেলের নিজ ফেসবুকে ‘কলা খাচ্ছি আরাম পাচ্ছি’ এরকম স্ট্যাটাসের জের ধরে তার বাবা চা বিক্রেতাকে ধরে নিয়ে মারধর করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেল। এব্যাপারে সংবাদ প্রকাশ হলে দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। পিতার উপর মারধরে বিভিন্ন পর্যায়ে নিন্দার ঝড় উঠে।