বগুড়ায় জুতা পায়ে শহীদ মিনারে দাঁড়াতে নিষেধ করায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন।
বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে বগুড়া শহরের সাতমাথা সংলগ্ন শহীদ খোকন পার্কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশের ওপর হামলা ও অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ থেকে ফেরার পথে ছাত্রদলের ২০ কর্মীকে আটক করে পুলিশ।
হামলায় আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, সদর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশরাফুল ইসলাম এবং পুলিশ লাইনসে কর্মরত কনস্টেবল পারভেজ, সিফাত ও মামুন। এদের মধ্যে আহত কনস্টেবল পারভেজকে বগুড়া পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী সময় সংবাদকে জানান, বগুড়ায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হলেও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বেলা ১১টা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শহীদ খোকন পার্কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে জমায়েত হতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে বগুড়া-৬ আসনের সাংসদ ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জি এম সিরাজ, বগুড়া-৪ আসনের সাংসদ মোশারফ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান লালুসহ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রা বের করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ওঠেন। বিষয়টি পুলিশের নজরে এলে তাদের শহীদ মিনরে না উঠতে অনুরোধ করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুই সাংসদের সামনেই ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এসময় লাঠির আঘাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়। এছাড়া কনস্টেবল পারভেজের মাথা ফেটে যায়।
তিনি বলেন, হঠাৎ করেই নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করেন এবং অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। পরে সমাবেশ থেকে ফেরার পথে ২০ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় বগুড়া সদর ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিলালুর রহমান বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তবে শহীদ মিনারে নেতা-কর্মীদের কেউ জুতা পায়ে দাঁড়াননি বলে দাবি করে বগুড়া-৬ আসনের সাংসদ এবং বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জি এম সিরাজ বলেন, শহীদ টিটু মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ আয়োজনের জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েও মেলেনি। পরে পুলিশ ঐতিহাসিক আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জমায়েত হওয়ার অনুমতি দেয়। নেতা-কর্মীরা সেখানে জমায়েত হওয়া শুরু করলে পুলিশ নেতা-কর্মীদের শহীদ খোকন পার্কে যেতে বলে। সেখানে কোনো কারণ ছাড়াই উসকানিমূলকভাবে পুলিশ লাঠি হাতে মারমুখী আচরণ করে। এতে পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।