বাবার সাথে বিকেলে বাজারে যায় মেয়ে রেশমা। এরপর রাত ৯ টায় জামাই সুমন ও তার এক বন্ধু জবরদস্তি করে রেশমা কে শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যায়। পরে রাত ১০টায় জামাই সুমন ফোন করে শ্বশুরকে জানায় আপনার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাড়াতাড়ি চলে আসুন। জামাইর বাড়ি গিয়ে দেখেতে পান মেয়ের নিথর দেহ পড়ে আছে খাটের উপরে।
এ সময় শ্বশুর বাড়ির লোকজন বলে আপনার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। মাত্র এক ঘন্টার ব্যবধানে এমন রহস্যজনক মৃত্যু কোনভাবেই মানতে পারেননি বাবা সিরাজ মোল্লা। তার দাবি পরিকল্পিতভাবে তার মেয়ে রেশমাকে হত্যা করা হয়েছে।
বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ সিরাজ মোল্লার মেয়ে রেশমার সাথে পার্শ্ববর্তী উত্তর গেন্ডামারা গ্রামের মৃত্যু আনোয়ার হাওলাদারের ছেলে মোঃ সুমনের বিবাহ হয়। বিয়ের সাত মাসের মাথায় শ্বশুরবাড়ি থেকে রেশমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মেয়ের বাবা বাদী হয়ে চলিত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামাই সুমনসহ ৯ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় জামাই সুমন ও তার বন্ধু আল-আমিনকে গ্রেফতারি পরোয়ানা দিলে তারা পলাতক রয়েছে।
বর্তমানে মামলার তদন্ত করছেন পাথরঘাটা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবু সালেহ।
মেয়ের বাবা কান্না জড়িত কন্ঠে অভিযোগ করে বলেন, তালতলী থানায় মামলা না নেওয়ায় তিনি আদালতে মামলা করেছেন। আর আসামীরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। তিনি মেয়ে হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, মেয়ে বাড়িতে এসে বলেন কয়েকদিন বেড়ানোর পরে শ্বশুর বাড়ি যাবেন। এরপর রাতে ৯টায় জামাই সুমন ও তার এক বন্ধু আল আমিন বাড়িতে এসে ঝগড়াঝাটি করে রেশমাকে নিয়ে যায়। এরপর রাত ১০ টায় ফোন করে বলে আপনার মেয়ে অসুস্থ। আমরা গিয়ে দেখি মেয়ে আর নাই মারা গেছে। জামাই সুমন ডাক্তার নিয়ে আসার কথা বলে পালিয়ে গেছে। সুমনের চাচি মনসুরা বেগম ও সুমনের কয়েকজন চাচাতো ভাই ছাড়া বাড়িতে আর কোন লোকজন ছিল না। রেশমার বাম চোখের বুরুতে, গলায়, বাম বুকে, বাম পিঠে ও তলপেটে দাগ দেখা গেছে। জামাই সুমন ও তার বন্ধু আল আমিন মাদকের ব্যবসা করতো এই ঘটনা জানার পরেই এমন রহস্যজনক পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে সিরাজ মোল্লার পরিবারের অভিযোগ।
এ বিষয়ে কথা বলতে রেশমার শ্বশুর বাড়ি গেলে সুমনের চাচি মানসুরা তাদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে রেশমা ঘরের মাচার আড়ার সাথে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
ছোটবগী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম মর্তুজা বলেন, ঘটনাটি শুনেছি যা একটি পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তার প্রমাণস্বরূপ গলায় হাতের আঙ্গুলের ছাপ দেখা গেছে।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পাথরঘাটা সার্কেল মোঃ আবু সালেহ বলেন, সিরাজ মোল্লা বাদী হয়ে তার মেয়ে হত্যার জন্য আদালতে মামলা করেছেন।এই মামলার তদন্ত চলছে আশাকরি মাস খানেকের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে তখন পুরো বিষয়টি জানা যাবে।
আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৫:৪৪ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি