চীনজুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ৪৯০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘আল জাজিরা’। আক্রান্তের সংখ্যাও প্রায় ২৫ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
এরইমধ্যে ২৫টি দেশে ১৭৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত করা হয়েছে। ভাইরাসের বিস্তার রোধে চীন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা এবং বাণিজ্য সীমিত করেছে ২২টি দেশ।
তবে, আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে। ওই শহর থেকেই ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী এ করোনা ভাইরাস। সেখানে মঙ্গলবার একদিনেই ৬৫ জন মারা গেছেন।
এর আগে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ৩৬১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। নতুন করে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। গতকাল পর্যন্ত এ রোগে মৃতের সংখ্যা ছিল ৪২৫ জনে। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় ২০ হাজারের মতো।
এরইমধ্যে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ‘হু’র মহাপরিচালক অ্যাডানোম গ্রেবিয়াসিস এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।
এদিকে, চীন থেকে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের পরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে আটকে পড়া ৩১২ জনকে শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) ফিরিয়ে আনা হয়। তাদের কারো শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়নি। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।
এদিকে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় বড় ধরনের অগ্রগতির দাবি করেছে থাইল্যান্ড। তারা জানায়, এইচআইভি এবং ফ্লু প্রতিরোধে ব্যবহৃত ওষুধ একত্রিত করে একটি মিশ্রণ তৈরি করা হয়েছে। ব্যবহারের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আক্রান্তদের অভূতপূর্ব উন্নতি হচ্ছে। যা মার্স ভাইরাসের ক্ষেত্রে চীন ব্যবহার করেছিল।
নাক, চোখ ও মুখের মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়ার পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির মলের মাধ্যমেও করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে বলে সতর্ক করেছেন উহানের গবেষকরা। জ্বরের বদলে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে ডায়রিয়া দেখা গেছে বলেও জানান তারা।
ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চীনের সঙ্গে ১০টি সীমান্ত পথ বন্ধ করে দিয়েছে হংকং। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি বেইজিংয়ের সঙ্গে বিমান চলাচল বাতিল অব্যাহত রেখেছে বিভিন্ন সংস্থা। চীন ভ্রমণ করা বিদেশিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রও।
নিউইয়র্ক বন্দরের নির্বাহী পরিচালক রিক কোটন বলেন, সরাসরি চীন থেকে বিমান চলাচল সীমিত করা হয়েছে। গত ১৪ দিনের মধ্যে যারা চীন ভ্রমণ করেছেন তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ নিষেধাজ্ঞা সবার জন্য।
চীন বলছে নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে ভীতি ও উদ্বেগ তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র।