চীনে চলমান মহামরি করোনাভাইরাসের পর এবার ব্রুসেলোসিস নামক এক ব্যাকটেরিয়াবাহিত রোগে আক্রান্ত হলেন উত্তর-পশ্চিম চীনের কয়েক হাজার পুরুষ।
লানঝৌর স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, গত বছরে সরকারি একটি বায়োফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থা প্রাণীর প্রতিষেধক তৈরি করছিল। সে সময় ব্রুসেলা নামের ব্যাকটেরিয়াটি ওই প্ল্যান্ট থেকে কোনোভাবে বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকেই সংক্রমিত হন অনেকেই।
স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, ৩ হাজার ২৪৫ জনের দেহে ইতোমধ্যেই ওই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটেছে।
চীনের বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভেড়া, শূয়োর প্রভৃতি প্রাণির দেহে এই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। যাদের দেহে এই সংক্রমণ ঘটেছে, তারা কোনোভাবে ওই প্রাণীর সংস্পর্শে এসেছিলেন।
রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, এই সংক্রমণের ফলে পুরুষদের শুক্রাণুর কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে। আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, এই রোগটি মাল্টা ফিভার বা মেডিটেরানিয়ান ফিভার নামেও পরিচিত। এই রোগের উপসর্গ হল, জ্বর, মাথা ও পেশী যন্ত্রণা এবং ক্লান্তি ভাব। সিডিসি আরও জানিয়েছে, মানুষের থেকে মানুষের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা বিরল। কোনও দূষিত খাবার থেকে এই সংক্রমণ ঘটে থাকে। লানঝৌ-এর ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে বলে ধারণা সিডিসির বিজ্ঞানীদের।
চীনের সরকারি সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসের রিপোর্ট বলছে, প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল অল্পসংখ্যক মানুষ এই ব্যাকটেরিয়ার শিকার হয়েছেন। কিন্তু ২১ হাজার মানুষের উপর পরীক্ষার পর দেখা গিয়েছে, সংখ্যাটা ধারণার চেয়েও অনেক বেশি। তবে এখনও পর্যন্ত এই রোগে মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। সংক্রমণ যাতে দ্রুত ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য দেশের বিভিন্ন প্রদেশগুলোকে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলেছে চীন সরকার।
প্রসঙ্গত, গত বছরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। ধীরে ধীরে সেটা অতিমারির আকার ধারণ করে। বিশ্বে এখনও পর্যন্ত করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা তিন কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে সাড়ে ৯ লাখ ৫৬ হাজার মানুষের। করোনার পরিস্থিতি সামলাতে চীনসহ গোটা বিশ্বকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সেটা মাথায় রেখেই ব্রুসেলোসিস যাতে করোনার মতো তাণ্ডব চালাতে না পারে তাই আগে থেকেই পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে চীন। সুত্রঃ এনডিটিভি।