মৌলভীবাজারের বড়লেখায় চাঞ্চল্যকর রিয়াজ উদ্দিন (২৫) হত্যার ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি সিরাজুল ইসলাম ওরফে ইমনকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ঘটনার প্রায় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে রাজধানীর তুরাগ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম কর্মকর্তা) মো. পারভেজ রানা।
র্যাব-১ সূত্র জানায়, ভিকটিম রিয়াজ উদ্দিন (৩২) রাজমিস্ত্রীর কাজসহ ডে-লেবারির কাজ করে আসছিলেন। গত মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আনুমানিক সাড়ে ৫টায় ভাঙ্গারীর দোকানে বস্তা উঠানোর কাজ আছে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। একই দিন ভিকটিম বাড়িতে ফিরে না আসায় ভিকটিমের পরিবার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে। তবে তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় প্রতিবেশী সুন্দর আলীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি মৃত ব্যক্তির লাশ ভিকটিমের স্বজনদের দেখানো হয়। তাৎক্ষণিক ভিকটিমের মা মৌলভীবাজারেরর বড়লেখা উপজেলাধীন পশ্চিম গাংকুল এলাকার মাধবছড়া খালের পূর্ব পাশে ধান ক্ষেতে ওই লাশটি দেখতে পান এবং লাশটি ভিকটিম রিয়াজ উদ্দিনের বলে শনাক্ত করেন। ভিকটিমের পরিবার ভিকটিমের মাথায়, কপালে, কানে, মুখে থুতনিতে গুরুত্বর কাটা জখম দেখতে পান।
র্যাব আরও জানায়, বড়লেখা থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে ওই ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে বড়লেখা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-০৩)। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব ওই ক্লুলেস হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটন এবং মামলার ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে র্যাব-১ ছায়াতদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বিকেলে র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, ওই ক্লুলেস হত্যা মামলার প্রধান আসামি ডিএমপি ঢাকা তুরাগ থানাধীন দৌড় নামক এলাকায় অবস্থান করছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে আভিযানিক দলটি ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ক্লুলেস হত্যা মামলার সিরাজুল ইসলাম ওরফে ইমনকে (৩২) গ্রেপ্তার করে।
র্যাব-১ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম কর্মকর্তা) মো. পারভেজ রানা জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামি সিরাজুল ইসলাম ওরফে ইমনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, রিয়াজ এবং সে একই মালিকের কাছে কাজ করতো। তাদের মধ্যে লেনদেন নিয়ে বিবাদ ছিল। বিবাদের জের ধরে গত বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় সে রিয়াজ কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে ভিকটিমের লাশ বড়লেখা উপজেলাধীন পশ্চিম গাংকুল এলাকার মাধবছড়া খালের পূর্ব পাশে ধান ক্ষেতে ফেলে ঢাকায় পালিয়ে আসে।
প্রসঙ্গত, ধৃত আসামির বিরুদ্ধে পূর্বের একটি হত্যা মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়া চলমান।
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি