তিমির বনিক, মৌলভীবাজার সংবাদদাতাঃ মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার ব্যবসায়ী শশাংক কুমার দত্তকে অপহরণ ঘটনার পরিকল্পনাকারীদের মূল হোতা সবুজ হোসেনের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বড়লেখার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম। সে দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউপি চন্ডিনগর (বড়গুল) গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার ছেলে। বুধবার (৯ জুন) তাকে বড়লেখা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এসময় সবুজ হোসেনের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। বিকেলে ভার্চুয়ালি শুনানি শেষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হরিদাস কুমারের আদালত।
৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বড়লেখা থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রতন চন্দ্র দেবনাথ। বুধবার রাত সাড়ে ৭টায় বলেন, ‘সবুজ অপহরণ ঘটনার পরিকল্পনাকারীদের মুল হোতা সবুজ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে, শুনানি শেষে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার অপহরণ ঘটনার পরিকল্পনাকারীদের মূল হোতা সবুজ হোসেনকে আটক করা হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকেসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করিয়া অপহরণে জড়িত আরও ৪জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ব্যবসায়ী অপহরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ৭জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে ইসমাইল আহমদ (হারুন) ও জুলমান আহমেদকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (৪ জুন) বিকেল আনুমানিক ছয়টার দিকে শশাংক কুমার দত্ত তাঁর বারইগ্রামের বাড়ি থেকে সিলেটের টিলাগড়ের ভাড়াটিয়া বাসার উদ্দেশ্যে বের হন। তিনি বড়লেখা উত্তর চৌঁমহনা পোষ্ট অফিসের সামনে থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে সিলেটের বিয়ানীবাজার যান। বিয়ানীবাজার থানার বারইগ্রামে গাড়ি বদলে সিলেটের উদ্দেশ্যে আরেকটি অটোরিকশায় উঠেন। সিলেট যাওয়ার পথে বিয়ানীবাজার থানার মোল্লাপুর রাস্তার সামনে পৌঁছালে একটি মাইক্রোবাস শশাংক কুমার দত্তের গাড়ির গতিরোধ করে তাকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। অপহরণকারী চক্র শশাংক কুমার দত্তকে অজ্ঞাত স্থানে রেখে বিভিন্ন ভিওআইপি নম্বর থেকে অপহৃত ব্যবসায়ীর ছোট ভাই সুবোধ কুমার দত্তের মোবাইলে ফোনে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এই ঘটনায় সুবোধ কুমার দত্ত বড়লেখা থানায় গিয়ে আইনগত সহায়তা চান। এরপরই পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। বড়লেখা থানা পুলিশের বিশেষ দল মাঠে এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে রহস্য উদঘাটন ও অপহারণকারীকে উদ্ধারে একটানা ৫৫ ঘন্টা অভিযান চালায়।
তারই ধারাবাহিকতায় গত রোববার (৬ জুন) দিবাগত রাতে বাহাদুরপুর চা-বাগানের গভীর জঙ্গল থেকে অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে দুই অপহরণকারী উপজেলার চন্ডিনগর গ্রামের ইসমাইল আহমদ (হারুন) ও বোবারথল গ্রামের জুলমান আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীর ভাই সুবোধ কুমার দত্ত গত সোমবার বড়লেখা থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন।