স্পোর্টস ডেস্কঃ দীর্ঘ দিন ধরে ব্রেইন টিউমারের সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ক্রিকেটার সামিউর রহমান সামি। গত মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৯টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
অসুস্থ ছিলেন দেড় বছর ধরেই। ব্রেনে টিউমার ধরা পড়েছিল, ডিমেনশিয়ায়ও (স্মৃতিভ্রষ্টতা) ভুগছিলেন। হাসপাতাল-বাড়িই করতে হচ্ছিল বেশ। সম্প্রতি শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিছুটা উন্নতি হওয়ায় বাসায় নেওয়া হয়েছিল তাকে। কিন্তু এরপরই আবার হাসপাতালে নিতে হয়। সেখান থেকেই আজ সকালে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাবেক ক্রিকেটার সামিউর রহমান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।
বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে খেলায় প্রথম ওয়ানডে পেসার ছিলেন সামিউর রহমান। খেলোয়াড়ি জীবনে ডানহাতি ফাস্ট মিডিয়াম বোলিংয়ে বাংলাদেশের হয়ে ২টি ম্যাচ খেলেছেন। ৩০ রান দিয়ে কোনও উইকেট পাননি যদিও। তাছাড়া তিনি প্রখ্যাত ক্রীড়া পরিবারেরও অন্যতম সদস্য। আইসিসি ট্রফিতে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান ইউসুফ রহমান বাবুর ছোট ভাই তিনি।
১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ মোরাতুয়ায় পাকিস্তানের বিপক্ষে যে ওয়ানডে দিয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু, সেটিতে বাংলাদেশ দলের পেসার ছিলেন সামিউর রহমান। তখনকার বাস্তবতায় আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার বড় হয়নি সামির, খেলতে পেরেছেন মাত্র দুইটি ওয়ানডে ম্যাচ। ছয়দিন পর ক্যান্ডিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি তাঁর ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ও শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
তবে ক্রিকেটার পরিচয়ের থেকে সামিউর রহমান বাংলাদেশের ক্রিকেটে বড় হয়ে আছেন বিসিবির ম্যাচ রেফারি পরিচয়ে। আজীবন ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন, ফার্স্ট ক্লাস ও লিস্ট এ ক্রিকেটে আম্পায়ারিং করেছেন ২৮ ম্যাচে। ম্যাচ রেফারি ছিলেন ১১১ ম্যাচে! টি-টোয়েন্টিতে ২৫টি ম্যাচেও ম্যাচ রেফারিং করেছেন।
ঢাকাই ক্লাব মোহামেডান, আবাহনী, আজাদ বয়েজ ও ব্রাদার্স ইউনিয়নেও খেলেছেন দীর্ঘদিন। ক্রিকেট ছাড়ার পরও খেলাটির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রেখেছিলেন। অবসরের পর আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব পালন করেছেন।
সাবেক এই ক্রিকেটারের মৃত্যুতে গভীর শোকে আচ্ছন্ন দেশের ক্রিকেট। আজ সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তাঁর স্মৃতির স্মরণে কক্সবাজারে ৪০ তম জাতীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচের আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।