চলতি সপ্তাহেই নতুন রাষ্ট্রপতি ঠিক করে মোঃ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে বিদায় করা হবে- আন্দোলনকারীদের এমন বার্তা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং আরেক নেতা সারজিস আলম। এই আশ্বাস পেয়ে টানা কয়েক ঘণ্টার আন্দোলন শেষে বঙ্গভবনের সামনে থেকে সরে যেতে শুরু করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গভবনে সামনে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এ কথা বলেছেন।
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনকে পদচ্যুত করা হলে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হবে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী আমাদের সহযোগী। তাদের বিপক্ষে অবস্থান নিলে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে- আন্তর্জাতিক মহলে এমনটা প্রচারের সুযোগ পাবে শত্রুরা।’
হাসনাত বলেন, ‘তাই সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মোঃ সাহাবুদ্দিনকে পদচ্যুত করা হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বলেন, ‘সেনাপ্রধান এখন দেশে নেই। তিনি দেশে আসার পর সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা হবে। যাকে নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকবে না। এই সপ্তাহের মধ্যেই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি ঠিক করে মোঃ সাহাবুদ্দিনকে পদচ্যুত করা হবে।’
সারজিস আলম বলেন, ‘একটি যুদ্ধে কৌশল হলো গুরুত্বপূর্ণ। আমরা গতকাল ফ্যাস্টিটের দোসর রাষ্ট্রপতির যে কথাটি শুনেছিলাম, তাতে আমাদের রক্ত টগবগিয়ে মাথায় উঠে যায়। এই রক্তের ক্ষত এখনো ভাসছে। আমরা যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে এখনই তার পদত্যাগ করিয়ে ফেলি তাহলে রাষ্ট্রের বড় ক্ষতি হতে পারে।’
সারজিস বলেন, ‘আমরা কৌশলের কাছে হেরে না যাই। আমাদের আন্দোলনে ভেতর ঢুকে দু-একজন ফ্যাসিস্টদের দোসর উসকানি দিতে পারে। কারণ, দেশকে অস্থিতিশীল দেখানো গেলে তারা ফায়দা লুটতে পারবে। তাই আমাদের সঙ্গে যাদের মত পার্থক্য রয়েছে তারা রাজপথে এসে উঁকি দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। আমরা সেই সুযোগ দিতে চাই না।’
এই ছাত্র নেতা বলেন, ‘আমরা দুদিন সময় দিয়েছি। সবকিছু ভেবেই সময় দেওয়া হয়েছে। এখানে যারা এসেছেন সবাইকে শ্রদ্ধা জানাই। বিশেষ করে এখানে গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের ইমোশনকে শ্রদ্ধা জানাই। হেডডাউন করা শ্রদ্ধা জানাই আপনাদের। যৌক্তিক সিদ্ধান্তের জন্য আপনাদের সামনে দিয়ে পেছনের লাইনে দাঁড়িয়ে আমরা আপনাদের সঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’
সবাইকে আন্দোলন প্রত্যাহার করে ঘরে ফেরার আহ্বান জানান তারা। এরপর সেখান থেকে তারা চলে যান। তবে এরপরও আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার একাংশ ঘটনাস্থলে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা সেখানে অবস্থান করছিলেন। তবে সে সময় পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত ছিল।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম