আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ চলতি সপ্তাহেই খাদ্যশস্য রপ্তানির প্রথম চালান পাঠানোর আশা করছে ইউক্রেন। গতকাল সোমবার (২৫ জুলাই) দেশটির জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তারা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে করা চুক্তির আওতায় এ সপ্তাহে চোরনোমরস্ক বন্দর দিয়ে খাদ্যশস্য পাঠানো সম্ভব হবে বলে তাঁরা আশা রাখছেন। আর দুই সপ্তাহের মধ্যে চুক্তিতে থাকা সব বন্দর দিয়ে শস্যের চালান পাঠানো যাবে বলেও তারা আশাবাদী।
সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের অবকাঠামোবিষয়ক মন্ত্রী ওলেক্সান্দর কুব্রাকভ বলেন, চুক্তিতে শস্য রপ্তানির পরিমাণের বিষয়ে কোনো সীমা বেঁধে দেওয়া নেই। চুক্তিতে সার আমদানি ও রপ্তানির সুযোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
ইউক্রেনের অবকাঠামোবিষয়ক উপমন্ত্রী ইয়ুরি ভাসিয়ুকভ বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের বন্দরগুলো দিয়ে রপ্তানি পুনরায় শুরু করতে প্রস্তুতি শেষ হবে বলে বিশ্বাস করি। আমরা চোরনোমরস্ক বন্দরের কথা বলছি। এখান দিয়েই প্রথমে রপ্তানি শুরু হবে। এরপর ওদেসা এবং তারপর পিভদেনি বন্দর দিয়েও রপ্তানি হবে।
এদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, চুক্তির আওতায় ইউক্রেনের শস্য রপ্তানিতে কোনো বাধা নেই। তবে পণ্য নিতে কোনো জাহাজ ইউক্রেনের বন্দরে ভিড়লে তাতে তল্লাশি চালানো হবে। জাহাজে কোনো সমরাস্ত্র আনা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেই এই তল্লাশি চালানো হবে। কায়রোতে আরব লিগ নেতাদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাহাজে করে ইউক্রেনে অস্ত্র এলে তা চলমান যুদ্ধকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে যাবে।
গত শুক্রবার জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইস্তাম্বুলে রাশিয়া-ইউক্রেন খাদ্যশস্য রপ্তানি চুক্তি হয়। পরদিনই ইউক্রেনের ওদেসা বন্দরে রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি পুনরায় শুরু করা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়।
উল্লেখ্য, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি খাদ্যশস্য রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউক্রেন ও রাশিয়া। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে। এরপর কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো দিয়ে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। অপর দিকে রাশিয়ার ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদেশগুলো। ফলে বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়। শুরু হয়েছে বৈশ্বিক খাদ্যসংকট।