দীর্ঘ ৪৮ বছরেও যুগোপযোগী করা হয়নি কাস্টমস অ্যাক্ট। হয়নি কাস্টম হাউসগুলোর পুরো অটোমেশনও। ফলে নানা জালিয়াতির মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পণ্য খালাসের ঘটনা যেমন বাড়ছে, তেমনি বন্ধ হচ্ছে না দুর্নীতি ও হয়রানি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনিয়ম ও বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচার বন্ধে বন্দর ও কাস্টমসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার মধ্যে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন করতে হবে। ন্যাশনাল সিঙ্গেল উনডো বাস্তবায়িত হলে অটোমেশন পূর্ণাঙ্গ হবে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো এই প্রকল্পটি চালু আছে। ইতিমধ্যে ৩৯টি মন্ত্রণালয় এবং সংস্থার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। অনলাইনে ইমপোটার এবং এক্সপোটাররা তাদের ডকুমেন্ট সাবমিট করবে। আমরাই অনলাইনের মাধ্যমে অন্য সংস্থাগুলো যাদের অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ে। তাদের জন্য আমরা এগুলো করিয়ে নিয়ে আসব।
আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সহজ করা এবং বন্দর থেকে দ্রুত পণ্য খালাসে ১৯৯৪ সালে কাস্টম হাউসগুলোর অটোমেশনের কাজ শুরু করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। তবে দীর্ঘ দেড় দশকেও শেষ হয়নি তা।
ফলে বাস্তবায়ন হয়নি পেপারলেস গ্রিন কাস্টম’সর স্বপ্ন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্দর, কাস্টমসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার অনলাইনে অপরটির সঙ্গে সংযোগ বা সমন্বয় না থাকায় বিনা শুল্কে বন্দর থেকে পাচার হচ্ছে অনেক পণ্য।
এনবিআরের সাবেক সদস্য ফরিদ আহমেদ, আমরা কাস্টমস টু কাস্টমস এখনো কোঅপারেশন করতে পারিনি। এখনো ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কিছুই হয়নি। ওখানে মাল খালাস হলে শুনি বিএসটিআইর মালামাল ওদের ক্লিয়ারেন্স ছাড়াই চলে গেছে। তার মানি, তার সাথে কানেক্টেভিটি নাই। ওনারা ডকুমেন্ট দিয়েছে সেই ডকুমেন্টে মাল গেছে। এই ধরণের যোগাযোগহীনতা অটোমেশন হাফ টান দিয়ে স্মার্ট পোর্ট কখনো করা যাবে না।
ব্যবসায়ীরা ও বলছেন, অর্ধেক অটোমেশনের কারণে বন্ধ হচ্ছে না দুর্নীতি ও হয়রানি। এছাড়া ১৯৬৯ সালের কাস্টমস অ্যাক্টের অনেক ধারা যুগোপযোগী না হওয়ায় আমদানি-রপ্তানিতে পোহাতে হচ্ছে জটিলতা।
এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনে সহসভাপতি মো. হাতেম বলেন, কাস্টমসের নিচের লেভেলের লোকজন অনেকেই দুর্নীতিগ্রস্ত, দুর্নীতিবাজ। তাদের পয়সা না দিলে ফাইল মুভ করে না। সেখানে দেখা যায় এমন এক মার পেচ লিখে দেয়, যেটা ছুটাতে আমাদের জান তেজপাতা। কাস্টমস অ্যাক্টের ধারাগুলো যদি সংশোধিত না হয়। তাহলে ব্যবসা করা যাবে না।
নতুন সংসদে সংশোধিত কাস্টমস অ্যাক্ট পাশ হবে জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলছেন, ওয়ান স্টপ সার্ভিস দিতে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইনডো প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে।