আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ চরম খাদ্য সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার জনগণ । একদিকে জ্বালানির সংকট সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে খাদ্যের অভাব। সেই সাথে এবার শিশু খাদ্যেও দেখা দিয়েছে সংকট। শিশুদের খাওয়ানোর মতো দুধ পাওয়া যাচ্ছে না দেশটিতে। বিবিসির খবরে এসব তথ্য জানা যায়।
দ্রব্যমূল্যের দাম নাগালের বাইরে হওয়ায় খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে দেশটির শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধারাও। বেশিরভাগ বাড়িতেই খাবারের সংকট। তাদের ঘরে প্রয়োজনীয় খাবার নেই। বেশি কষ্টে আছে নারী ও শিশুরা। খাবারের জন্য তারা বাচ্চাদের নিয়ে খাবারের লাইনে অপেক্ষা করছেন দিনের পর দিন।
খাবার নিতে লাইনে দাঁড়ানো এক জননী চন্দ্রিকা মানেল বলেন, আমরা এখানে এসেছি, কারণ আমরা ক্ষুধার্ত। শাক সবজির দামও চলে গেছে হাতের নাগালের বাইরে। বাচ্চাদের খাবারের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। শিশুদের কাটছে ভয়ংকর দিন।
জানা যায়, শুধু জুন মাসেই শ্রীলঙ্কায় খাদ্য পণ্যের দাম ৮০ শতাংশ বেড়েছে। তাই অধিকাংশ শিশুরাই পাচ্ছে না পুষ্টিসম্পন্ন খাবার।
এদিকে শ্রীলংকার এই মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট এখন অব্যাহত চাপের মুখে আছেন। এই দ্বীপ-রাষ্ট্রের জ্বালানি প্রায় ফুরিয়ে যাওয়ার পথে, কারণ তাদের আর জ্বালানি আমদানি করার মতো সামর্থ্য নেই। এ সপ্তাহে দেশটির স্কুলগুলোতে ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছে এবং অতি জরুরি সেবা ছাড়া আর সবকিছুর জন্য জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট রাজাপাকশে এখন রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় জ্বালানি তেল কেনার জন্য প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে চিঠি লিখেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ব্যাপক হারে কর নেয়ার পদক্ষেপের মাধ্যমে এ সংকটের সূচনা হয়। এ সময়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সেও ভাটা পড়ে। ফলে দেশটির আয় কমতে থাকে। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে হিমশিম খেতে থাকে শ্রীলঙ্কা। চীনের কাছ থেকে নেয়া অর্থ ঋণের বড় অংশই ছিল উচ্চাভিলাষী অবকাঠামোগত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য। এ সময়ে আমদানি পণ্যের মূল্য পরিশোধে হিমশিম খেতে থাকে সরকার। পরিস্থিতি খারাপ হয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়ে এক সময় তা সহিংসতায় রূপ নেয়। অবশেষে সরকার পরিবর্তন হয়।