চট্টগ্রাম নতুন ব্রিজ থেকে কক্সবাজার ২ লেনের রাস্তা পরিণত হয়েছে ভয়াল মৃত্যুফাঁদে। এই রাস্তায় প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ঘটছে দুর্ঘটনা আর অকালে ঝরছে প্রাণ। প্রশাসন এই দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করার পরেও প্রাণহানি ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না।
এই ঘটনার তদন্তে পুলিশ বলছে, একাধিক কারণে রয়েছে এ দুর্ঘটনার পেছনে। যেমন- অদক্ষ এবং প্রশিক্ষণবিহীন চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, বিনা প্রয়োজনে ওভারটেক করা, বেপরোয়া গতি, ভাঙাচোরা সড়ক ও চালকদের প্রায়ই নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়া ও ট্রাফিক আইন না মানাসহ বিভিন্ন কারণে এ সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে একের পর এক দুর্ঘটনা।
এছাড়াও চট্টগ্রাম নতুন ব্রিজ অর্থাৎ কর্ণফুলী সেতু থেকে চন্দনাইশের দোহাজারী শঙ্খনদী ব্রিজ পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার সড়কে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় ৫০টির মত বাঁক। গত এক বছরে চট্টগ্রাম নতুন ব্রিজ থেকে কক্সবাজার এর এই ২ লেনের রাস্তায় নিহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ।
আর আহত হয়েছেন কয়েকশ’ প্রায়। পুলিশের কাছে এই নিহত ও আহতের সুনির্দিষ্ট কোন পরিসংখ্যান নেই। তবে পুলিশের ধারণা, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গত এক বছরে অর্ধশতাধিক মানুষ মারা গেছেন আর কয়েকশ’ লোক আহত হয়েছেন।
এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমান এই সময়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে বৈধ যানবাহনের চেয়ে অবৈধ যানবাহন বেশি। আর অবৈধ যানবাহনের মালিকরা অবৈধ উপায় অবলম্বন করে পুলিশকে টাকা দিয়ে সড়কে যানবাহন নামায়।
কিন্তু অনেকের গাড়ির ফিটনেস ঠিক নেই, রুট পারমিট নেই। তারপরও এসব গাড়ি মহাসড়কে চলাচল করে। পুলিশকে অসদুপায়ে ম্যানেজ করে এসব গাড়ি মহাসড়কে চলাচল করে। আর এ কারণে ঘটছে প্রতিনিয়ত প্রাণহানিকর দুর্ঘটনা।
চট্টগ্রাম নতুন ব্রিজ থেকে কক্সবাজার ২ লেনের রাস্তা মানে কর্ণফুলী সেতু থেকে চন্দনাইশের দোহাজারী শঙ্খনদীর ব্রিজ পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার সড়কে রয়েছে ৫০ টি বাঁক। এসব বাঁক নয়, যেন এক ভয়াল মৃত্যুফাঁদ।
আর প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া ছোট-বড় দুর্ঘটনার অপর নাম হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক।
এই সড়কটি পটিয়া মইজ্জার টেক, পটিয়া-আনোয়ারা ক্রসিং, মনসার টেক, বাদামতল টেক, গৈড়লার টেক, আমজুরহাট, পটিয়া পোস্ট অফিস, আদালত গেট মোড়, থানার মোড়, ডাক বাংলোর মোড়, বাসস্টেশন, কমলমুন্সির হাট মিলে রয়েছে মোট ৩০টি পয়েন্টে ও চন্দনাইশ উপজেলায় রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক। আর এসব বাঁকে প্রায় প্রতিনিয়তই ঘটছে অহরহ দুর্ঘটনা।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার ওসি ইয়াসির আরাফাত এবিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে অতিরিক্ত গাড়ির চাপেই এ দুর্ঘটনার প্রধান কারণ।
এছাড়াও রয়েছে গাড়ির বেপরোয়া গতি, অদক্ষ চালক, পর্যটন মৌসুমে যাত্রী অত্যাধিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় বেশি ট্রিপের লোভ, ট্র্যাফিক আইন না মেনে গাড়ি চলাচল, সরু সরু সড়ক আর ইটভাটার মাটি ও লবণের পানি সড়কে পড়ে পিচ্ছিল হয়ে যাওয়াতেও হঠাৎ দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে।