ঘুষ নেয়ার অপরাধে ছাত্র- জনতার আন্দোলনের মুখে নিজে পদে ইস্তেফা দিলেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের উপসহকারী ভুমি কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার নাম হুসাইন মোহাম্মদ রাসেল। তিনি দীর্ঘদিন থেকে তার অফিসে আসা সেবাগ্রহীতাদের নিকট থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিতেন। ঘুষ ছাড়া তার অফিসে কোন কাজ হতনা বলে অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগ বুধবার সকাল থেকে ছাত্র- জনতা ঘুষের টাকা ফেরত ও তার শাস্তির দাবীতে অফিস ঘেরাও করে বিক্ষেভ করেন।
জানা য়ায়, গত মঙ্গলবার সকালে মাসুদ নামের একজন সেবা প্রত্যাশির কাছে ১ হাজার টাকার খাজনার বিপরীতে ১৩ হাজার টাকা গ্রহণ করে তার অফিস সহায়ক হুমায়ুন কবীর। পরে বুধবার সকালে ছাত্ররা এ সংবাদ পেলে কেদার ভুমি অফিসে আসেন তারা। মাসুদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছাত্ররা অফিস সহায়ক হুমায়ুন কবীর ও ভুমি কর্মকর্তা হুসাইন মোহাম্মদ রাসেলকে জিঞ্জাসাবাদ করলে এর সত্যতা পাওয়া যায়। তৎক্ষনাত ঘুষের ১৩ হাজার টাকা ছাত্রদের উপস্থিতিতে ফেরত দেয় অফিস সহায়ক।
এরপর শতশত জনতা অফিসটি ঘিরে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন। এসময় ছাত্রদের কাছে অনেক ভূক্তভোগী অভিযোগ নিয়ে আসেন। দুপুর হতেই বিক্ষোভের মাত্রা তীব্র হয়। পরে ছাত্র জনতার চাপের মুখে দোষ স্বীকার করে পদত্যাগ করেন তিনি। এ সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি পদত্যাগ পত্র লিখে তিনি ছাত্রদের কাছে জমা দেন এবং উপস্থিত বিক্ষোভকারী জনতার কাছে নিজ কর্মের জন্য ক্ষমা চান। এসময় জনতার চাপে তার গলায় জুতার মালা পরানো হয়।
ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, গতকাল মাসুদ নামের একজনের জমির খাজনা দিতে এলে তার নিকট ১৩ হাজার টাকা নেয়া হয়। এর মধ্যে ১হাজার ৪০ টাকা সরকারী ফি বাবদ আর বাকী টাকা উপরি হিসেবে নেয়া হয়। গতকাল স্যার ( ভূমি উপসহকারী) উপস্থিত ছিলেন না। তার সাথে ফোনে কথা বলে এই টাকা রেখে দিয়েছিলাম। এখান থেকে স্যার সাড়ে সাত হাজার টাকা নিতেন বাকী টাকা আমি নিতাম। আজ (বুধবার) ছাত্রদের কাছে বিষয়টা গেলে সেবাগ্রহতিকে সব টাকা ফেরত দিয়েছি।
ভূমি উপসকারী হুসাইন মোহাম্মদ সকল অনিয়ম ও ঘুষ নেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, তিনি নিজ অপরাধের জন্য ছাত্রদের নিকট ইস্তেফা পত্র দিয়েছেন।
এদিকে বিকাল ৫টার দিকে খবর পেয়ে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিব্বির আহম্মেদ ঘটনা স্থলে আসেন। পরে ছাত্র জনতার কথা শোনেন তিনি । এসময় ভূমি উপসহকারীর ইস্তেফাপত্র ছাত্ররা তার নিকট হস্তান্তর করেন। পরে তাকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি ও ঘুষের টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। পরে উপসহকারীকে নিজ জিম্মায় নেন তিনি।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ জানান, ভূমি উপসহকারী রাসেলকে সাময়ীক বরখাস্ত করা হবে। আর তার দেয়া ইস্তেফাপত্র জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেবাপ্রত্যাশীদের ঘুষের টাকার লেনদেনের যথাযথ প্রমান দিলে টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
আজ ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৩:৩২ | বৃহস্পতিবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজ বাপ্পি