সারা বিশ্বে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে মরণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশেও তা বাড়ছে ব্যাপক হারে। এ অবস্থায় ঘরে থাকার কোনো বিকল্প নেই বলে জানালেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলেন, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের ৮০ শতাংশ রোগীর ঘরেই চিকিৎসা সম্ভব। মাত্র ২০ শতাংশ হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন হয়। তাদের অক্সিজেন সাপোর্ট ও কিছু ওষুধ লাগতে পারে। সর্দি, কাশি ও জ্বর হলে শুধু প্যারাসিটামল ও অ্যান্টি হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ সেবন করলে হবে। তবে শ্বাসকষ্ট ও গলায় ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে।
প্রসঙ্গত, করোনা প্রতিরোধের টিকা নেই, চিকিৎসায় নেই সুনির্দিষ্ট কোনো ওষুধ। অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ এটি, মানুষ মারা যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান হারে। পৃথিবী অচল হচ্ছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হচ্ছে প্রতিদিন। চাহিদা ও সরবরাহ নিম্নমুখী হচ্ছে। বিশ্ব ধাবিত হচ্ছে বড়ো ধরনের অর্থনৈতিক মন্দার দিকে। প্রচুর মানুষ চাকরি হারাচ্ছে, কর্মসংস্থানের অন্যান্য ব্যবস্থা সংকুচিত হয়ে আসছে ক্রমান্বয়ে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ঘরে থাকা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সবাই ঘরে থাকবেন, চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়ার দরকার নেই। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের ৮০ শতাংশই ঘরে বসে চিকিৎসাসেবা নিতে পারেন। যত বেশি ঘরে থাকবেন, তত বেশি নিজে, পরিবার ও দেশকে নিরাপদ রাখবেন। তিনি বলেন, শ্বাসকষ্ট ও গলায় ব্যথা না হলে হাসপাতালে আসার প্রয়োজন নেই।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে হলে সবার ঘরে থাকতে হবে। ঘরে থেকে নিজে বাঁচুন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান।
বাংলাদেশে মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব. ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল বলেন, করোনার সুনির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। তবে উপসর্গ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করলে ৮০ ভাগ রোগী এমনিতেই সুস্থ হয়ে যান। বাংলাদেশ প্রাইভেট হসপিটাল, ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশেনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, তথ্য গোপন করলে অন্যের মৃত্যু ডেকে নিয়ে আসবে। তাই করোনা আক্রান্ত রোগীদের তথ্য গোপন করা উচিত নয়। তিনি বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে কিট দিলে পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। কারণ হার্টের রোগী, কিডনি রোগীরাও করোনায় আক্রান্ত। এটা পরীক্ষা না করলে বোঝার উপায় থাকে না। সরকারের একার পক্ষে করোনা মোকাবিলা করা সম্ভব না। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালের সাপোর্টও নেওয়া উচিত। তাই বেসরকারি হাসপাতালে কিট দিতে হবে। করোনার র্যাপিড পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন তিনি।ইত্তেফাক