করোনার মধ্যে গাজীপুরের শ্রীপুরে মা ও দুই মেয়েকে ধর্ষণের পর ৪ জনকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় এলাকার মানুষ শোকে স্তব্ধ। লোমহর্ষক এ ঘটনায় আবদার গ্রামের বাসিন্দারা আতঙ্কিত।
বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে জৈনাবাজার এলাকার ওই বাড়িটির দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাট থেকে মা, দুই মেয়ে ও এক ছেলের মরদেহ উদ্ধার হয়।
এর আগে বুধবার রাতের কোনো একসময় দুর্বৃত্তরা ওই চারজনকে গলা কেটে হত্যা করে এবং হত্যার আগে মা ও দুই মেয়েকে ধর্ষণ করা হয় বলে ধারণা করছে পুলিশ।
গাজীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল বৃহস্পতিবার শেখ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ঘরের ভেতর গলাকাটা মরদেহ দেখে প্রবাসী কাজলের ভাই আরিফুল ইসলাম পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়িটি ঘিরে রাখে। পরে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ বাড়িটিতে গিয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা হত্যার আগে মা ও দুই মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। তবে ময়নাতদন্তের পর এ বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া যাবে।’
নিহতরা হলেন ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের লংগাইর ইউনিয়নের গোলাবাড়ী গ্রামের মালয়েশিয়াপ্রবাসী রেদোয়ান হোসেন কাজলের স্ত্রী স্মৃতি ফাতেমা (৪৫), তার বড় মেয়ে সাবরিনা সুলতানা নূরা (১৬), ছোট মেয়ে হাওরিন হাওয়া (১২) ও বাকপ্রতিবন্ধী ছেলে ফাদিল (৮)। তারা জৈনাবাজার এলাকায় জমি কিনে বাড়ি বানিয়ে প্রায় দুই যুগ ধরে বসবাস করে আসছিলেন।
এ ঘটনায় প্রবাসী রেজোয়ান হোসেন কাজলের বাবা আবুল হোসেন বৃহস্পতিবার রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন।
প্রবাসী কাজলের ভাগনে মেহেদী হাসান জানান, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে চারজনের মরদেহ ময়মনসিংহের পাগলা থানার গোলাবাড়ি গ্রামে দাফন করা হবে।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, এ ঘটনায় নিহতের শ্বশুর আবুল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন। হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। খুব শিগগিরই খুনিরা ধরা পড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার মা ও তিন সন্তানকে হত্যার খবর পেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ এবং জেলার পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।