ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজাতে যুদ্ধ পরিস্থিতি ও খাবারের সংকট দিন দিন চরম মাত্রায় ঠেকছে। এবার উপত্যকাটিতে না খেতে পেয়ে অনাহারে থেকে মারা গেছে দুই মাসের এক ফিলিস্তিনি শিশু।
যুদ্ধ ও ক্ষুধার কারণে শিশু মৃত্যুর জাতিসংঘের সতর্কতার পরপরই ভূখণ্ডটিতে এ হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটলো। জাতিসংঘ সম্প্রতি সতর্ক করে দিয়েছিল যে, খাবারের অভাবে গাজায় হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুর মুখে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, শুক্রবার গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে মাহমুদ ফাতুহ মারা যায়। তার ভিডিও ফুটেজটি যাচাই করেছে আল জাজিরা। ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি হাসপাতালের বিছানায় শ্বাস নেয়ার জন্য প্রচণ্ড চেষ্টা করছে শিশু মাহমুদ। একজন প্যারামেডিক যারা ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন তারা বলেছেন মাহমুদ তীব্র অপুষ্টিতে মারা গেছে।
ওই প্যারামেডিক বলেন, আমরা দেখেছি একজন মহিলা তার বাচ্চাকে নিয়ে যাচ্ছে, সাহায্যের জন্য চিৎকার করছে। তার ফ্যাকাশে শিশুটি শেষ নিঃশ্বাস নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই এবং দেখা যায় সে তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। চিকিৎসকেরা তাকে দ্রুত আইসিইউতে নিয়ে যান। গাজায় শিশুর দুধ সম্পূর্ণ অনুপস্থিত থাকায় কয়েকদিন ধরে শিশুকে কোনো দুধ খাওয়ানো যায়নি।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল গাজায় নির্বিচারে সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। তারা অবরুদ্ধ ছিটমহলে আরও সাহায্যের অনুমতি দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাপী আবেদনগুলোকেও উপেক্ষা করে চলেছে। জাতিসংঘ বলছে, গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষ এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। ইসরায়েল হামলার শুরুতে গাজায় খাদ্য, পানি এবং জ্বালানীর সমস্ত সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিশরের রাফাহ ক্রসিং দিয়ে সামান্য পরিমাণ সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। তবে সেটিও ইসরায়েলের কঠোর চেকের মুখোমুখি হচ্ছে ও ইহুদিদের বাধার মুখে পড়ছে।
উল্লেখ্য, হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যকার যুদ্ধে গাজায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৯ হাজার ৬০৬ জন নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো ৬৯ হাজার ৭৩৭ ফিলিস্তিনি।
আজ ২১শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বর্ষাকাল | ২৯শে জিলহজ, ১৪৪৫ হিজরি | রাত ১২:১৯ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/ এমআরবি