ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জার পাশাপাশি হামলা হচ্ছে হাসপাতালেও। এতে করে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই ভেঙে পড়েছে। এর সঙ্গে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে দেখা দিয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। এমন অবস্থায় গাজায় অনাহারে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে করে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে অনাহারে মৃতের সংখ্যা পৌঁছাল ২০ জনে।
এছাড়া হিসাবের বাইরেও ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ডের আরও অনেকেই নীরবে মারা যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এবং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে আল-শিফা হাসপাতালে ১৫ বছর বয়সী এক শিশু এবং উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে ৭২ বছর বয়সী একজন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
আল-কুদরা জোর দিয়ে বলেন, ঘোষিত এই মৃত্যুর সংখ্যা শুধুমাত্র হাসপাতালে যারা পৌঁছেছেন বা হাসপাতালে যারা মারা গেছেন তাদের মৃত্যুকেই সামনে আনছে।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, আরও বহু লোক হাসপাতালে না পৌঁছানোর ফলে অনাহারে নীরবেই মারা যাচ্ছেন। উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে, বিশেষ করে শিশু, গর্ভবতী নারী এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য।
অন্যদিকে হাজার হাজার মানুষ অনাহারে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন বলেও আল-কুদরা সতর্ক করে দিয়েছেন। একইসঙ্গে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবিলম্বে মানবিক ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র ‘ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তর গাজার হাজার হাজার ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর ভয়ঙ্কর গণহত্যা চালানোর’ জন্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে অভিযুক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম