দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কোটাবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে কাজ করছে সরকার। খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, গণভবনের দরজা খোলা। কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে আমি বসতে চাই, তাদের কথা শুনতে চাই। আমি সংঘাত চাই না।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা গণমাধ্যমে জানান, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দেওয়া যায়, তা নিয়ে দল ও সরকারের অভ্যন্তরে প্রতিনিয়ত আলোচনা চলছে। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো বিষয়ে তারা জনগণের মুখোমুখি হয়নি। বরং আওয়ামী লীগের সঙ্গে জনগণ একাত্ম হয়ে নানা ঐতিহাসিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে। এবারই প্রথম দেশের নানা দল-মতের মানুষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নেমেছে। কেন এমনটা ঘটছে, তা নিয়ে দলের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে নানা বিশ্লেষণ চলছে। কীভাবে বিক্ষুব্ধদের শান্ত করা যায়, সে বিষয়ে কার্যকর পথ খোঁজা হচ্ছে।
দলীয় একাধিক সূত্র মতে, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মুখোমুখি কোনো সংঘর্ষে যেতে চায় না আওয়ামী লীগ। তবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার ফলে তারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে সহিংসতার চেষ্টা করতে পারে। এ কারণে রাজপথে বড় জমায়েতের কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির প্রমাণ দেখাতে চায়। আন্দোলন নিরসনে শিক্ষার্থীদের নেতাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। তাদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে যে এই আন্দোলনের ওপর ভর করে একটি মহল দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। যেহেতু কোটা সংস্কারের মূল দাবি পূরণ হয়েছে, সে কারণে এ আন্দোলন যেন প্রত্যাহার করা হয়, সে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
দলীয় একাধিক নেতার মতে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টার অংশ হিসেবে আন্দোলনকালে সহিংসতা, নাশকতার ঘটনার মামলায় যারা জড়িত নয়, তাদের বিরুদ্ধে কোনো হয়রানিমূলক ব্যবস্থা না নিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষার্থী যেসব শিক্ষার্থী গ্রেফতার হয়েছিল, তাদের জামিন ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করছে সরকার। দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও পক্ষে আনার চেষ্টা করছে সরকার। আন্দোলনকালে হতাহতের বিষয়ে নানা অতিরঞ্জিত প্রচারণার বিষয়টি বিদেশিদের কাছে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। সরকারের দিক থেকে নানা তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে। এমনকি আন্দোলন চলাকালে নিহতদের বিষয়টির সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের আওতা বাড়ানো হয়েছে। তিনজন বিচারপতিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তে জাতিসংঘসহ যেকোনো দেশ কিংবা সংস্থা চাইলে যোগ দিতে পারে। সরকার তাকে স্বাগত জানাবে।
আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ১০:৩১ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/ এমআরবি