সুষ্ঠু নির্বাচন করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের। কিন্তু যোগ্য ব্যক্তি নির্বাচন করার দায়িত্ব ভোটার তথা জনগনের। একই সাথে রাজনৈতিক দলেরও দায়িত্ব রয়েছে যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে হার জিত হবেই। জয় পরাজয় নিয়ে দু:খ কষ্টও স্বাভাবিক কিন্তু, পরাজিত হলেই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করা সঠিক নয়। অনিয়ম হলে অবশ্যই একজন প্রার্থী হিসাবে কোর্টে গিয়ে মামলা করতে পারেন। সেই মামলার উপযুক্ত প্রমানিক দলিল না পেলে কোর্ট কিভাবে বিচার করবে তা কোর্টের এখতিয়ার। কিন্তু কোর্টের সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করে বছরের পর বছর ধরে আন্দোলন করা যেমন গণতন্ত্র নয় রাজনীতিও নয়। বরং নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করাই গণতন্ত্র বিরোধী উগ্রতা।
ভুল ব্যখ্যা দিয়ে জনগণকে উষ্কে দেওয়ার রাজনৈতিক অপকৌশল। এখন দেশে সেই অপরাজনীতিই চলছে। বিষয়টি এখন জনগনও জানে তাই রাজনীতির প্রতি মানুষের সমর্থন কমে গেছে। দলের অনেক কর্মী জড়ো করে রাজধানী অবরোধ আন্দোলন করলেই সরকার পরে যাবে এমনটি ভাবার কোনই কারন নেই। জনগন এখন দেশে আর রাজনৈতিক সংঘাত চায়না। যেভাবে দেশে উন্নয়ন হয়েছে এবং রপ্তানী বানিজ্য প্রসারিত হয়েছে তাতে একদিন হরতালে হলে রাজস্ব ক্ষতি হয় ১০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী। বিদেশী বাজার ব্যহত হয় আরও বেশী। মানুষের দৈনন্দিন কর্মকান্ডের ক্ষতি হয় বিপুল পরিমান।
বিশ্ব অর্থনীতির দুরাবস্থা এখন পৃথিবী জুড়েই। উন্নত দেশেও বিদ্যুৎ সরবরাহের স্বল্পতা আর দ্রব্যমল্যের উর্ধগতি অসহনীয় হয়ে পরেছে। বাংলাদেশেও দ্রব্যমূল্যের কারনে জনগনের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে সরকারী নিষেধাজ্ঞায় জীবন এখন অতিষ্ঠ। তার উপর রাজনীতির এই উগ্রবাদী আচরনে জনগণ এখন বিরক্ত। সম্প্রতি ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে বিরোধী দল (বি এন পি) অংশগ্রহন করেনি। কিন্তু হিরু আলমের মত একজন প্রার্থীকে ইন্দন যোগিয়েছে পেছন থেকে। হিরু আলম প্রার্থী হিসাবে কেমন তা ভোটাররাই বিবেচনা করবে। নির্বাচনে হিরু আলমের জয় পরাজয় নিয়েও কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। তারপরেও গণমাধ্যমে এই হিরু আলম কে নিয়ে যেভাবে প্রচারনা চলেছে তা দেশের রাজনীতির জন্য শুভ লক্ষণ নয়। বিরোধী দলও চেয়েছে হিরু আলম পরাজিত হউক। নির্বাচনের স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা নিয়ে ইস্যু তৈয়ার করাই ছিল বিরোধী দলের মূল লক্ষ্য। রাজনীতি কৌশলের খেলা এবং সব দলই খেলাটি খেলে। তবে হিরু আলমকে নিয়ে যারা খেলেছেন তারা ভুল খেলেছেন।এমন ইস্যুকে সম্বল করে রাজনৈতিক সুবিধা আশা করা ছিল অপরাজনীতি। যথাযথ ভাবেই এই খেলায় তারা পরাজিত হয়েছেন। লাভ হয়েছে হিরু আলমেরই তিনি জোকার থেকে রাজনৈতিক হিরু বনে গেছেন।
✪ আরও পড়ুন:বিদেশী প্রেস্ক্রিপশনে শেখ হাসিনা চলেননা
দেশে একটি যোগ্য বিরোধী দল এখন খুব জরুরী। বি এন পি একটি বড় দল এবং জনসমর্থনও আছে দলটির। কিন্তু যোগ্য বিরোধী দল হতে পারেনি ১৪ বছরেও। এখন দলটিতে নেতৃত্ব দেওয়ারও কেউ নেই। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করছে কিন্তু দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নেই। সম্মেলন হয়নি বহু বছর। যদি নির্বাচনে জিতে যায় তাহলে বি এন পি কাকে প্রধানমন্ত্রী বানাবে তা জাতির কাছে বলতে পারছেনা। এমন নেতৃত্বহীন দলকে জনগন ভোট দিবে কেন?
✪ আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুল
রাজনীতি জটিল বিষয় এবং জনগনকে সব বিষয়ে অবহিত করেই রাজনীতি করতে হবে। বি এন পি এখন সত্য গোপন করে যে রাজনীতি করছে তা দল দেশ কিংবা জাতি কারো জন্যই সুখকর নয়। দলটি যদি জাতিকে তাদের স্বচ্ছতা বোঝাতে না পারে তাহলে রাজনীতি থেকে ছিটকে পরার ঝুঁকিটি থেকেই যাবে।
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজ বাপ্পি