সম্ভবত ৬৩ বা ৬৪ সালের ঘটনা, আমাদের গ্রামে একজনের খুন হলো। খুনিরা দুই ভাই এবং একই গ্রামের। যাকে খুন করা হলো সেও খুনী দুইভাইয়ের শ্যলক। একজন সহযোগীও ছিল একই গ্রামের। তিনজনই বয়সে তরুন এবং সহজেই ধরা পরে গেল। জেলে ছিল অনেকদিন। তখন ডি এন এ পরীক্ষা হত পশ্চিম পাকিস্তানে, ঢাকায় কোন পরীক্ষাগার ছিলনা। খুনের আলামত সংগ্রহ করা হলেও তা পরীক্ষা করার জন্য করাচীতে পাঠানো হয়েছিল। যেভাবে খুন করা হয়েছে এবং, যে আলামত সংগৃহিত হয়েছে তাতে দুই সহোদরের ফাঁসি হওয়া ছিল প্রায় নিশ্চিত কিন্তু, তারা ছাড়া পেয়ে গেল। তাদের এক আত্নীয় চাকুরী করতেন করাচীতে এবং ডি এন এ পরীক্ষাগারে। রক্তের আলামত আসামীর নয় বলে রিপোর্ট দিয়ে আসামীদের মূক্ত করে আনে। ডি এন এ পরীক্ষার তথ্যটি জেনেছি সেই সময় লৌহজং থানার ও সি মাসুদ সাহেবের মূখে,তাও বহু বছর পর। তার ছেলে বন্ধু হওয়ায় তার কর্মক্ষেত্র আমার উপজিলায় ছিল এবং সময়কালটি মিলে যাওয়ায়, জিগ্যেস করে জেনেছি। নাহয় তথ্যটি অজানাই থেকে যেত। আজ টেলিভিশনের মিথিলার উপস্থাপনায় এক টক শো’তে আলোচনা শুনছিলাম ডাঃ সাব্রিনার বিরুদ্ধে চার্চশিট নিয়ে। ডাঃ সাব্রিনার বিরুদ্ধে চার্জ করা হয়েছে প্রতারনার। এই মামলায় দোষি সাব্যস্থ হলে সর্বোচ্চ সাজা হবে ৭ বছর। ছুটি ছাটা দিয়ে দু এক বছরের মধ্যেই ছাড়া পেয়ে যাবে সাব্রিনা। কিন্তু ডাঃ সাব্রিনা মিথ্যা সার্টিফিকেট দিয়েছে ৬ থেকে সাড়ে ছয় হাজার জনকে। প্রত্যেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে পাঁচ থেকে ছয় হাজার করে। আনুমানিক প্রায় তিন, সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্নসাধ করেছে সার্টিফিকেট দিয়ে। এ ছাড়াও সরকারি পদে থেকে সুবিধা ভোগ করেছে অনৈতিকভাবে। যদি নেগেটিভ সার্টিফিকেট পাওয়া কেউ করোনায় মারা গিয়ে থাকে তাহলে, ডাঃ সাব্রিনার বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় মামলা দায়ের করা যায়। এই ধারায় অপরাধ প্রমানীত হলে সাজা হবে মৃত্যুদন্ড। যে ছয়/ সাড়ে ছয় হাজার সার্টিফিকেটের তদন্ত না করে শুধু প্রতারনা মামলা দায়ের করা কি সাব্রিনাকে রক্ষা করার কৌশল? আদালতে বিচার হবে চার্জশিট আর স্বাক্ষি প্রমানের ভিত্তিতে। স্বাক্ষিত পাওয়াই যাবেনা, চার্জশিটই যদি সঠিক না হয় তাহলে বিচার হবে লবডংকা। এত আলোচনা, হৈচৈ আর খবরের উত্তেজনা কয়েকদিন পর থেমে যাবে। এভাবেই সব বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, দায়ী হয়েছে বিচারব্যবস্থা। একবার ধানমন্ডি থানার ওসি’র রুমে একটা পোষ্টার দেখেছিলাম এই রকম। P- polite O- obedient L-Loyal I- Intelligent C- Committed E- Energetic বাংলাদেশের পুলিশের কোনটার অভাব আছে?
আজিজুর রহমান প্রিন্স
রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক
টরেন্টো, কানাডা
৭ আগষ্ট ২০২০।