মোঃ খোরশেদ আলম, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ পবিত্র কোরআনে বর্ণিত মরুভূমির মিষ্টি ফল ত্বীন কুমিল্লা জেলা মুরাদনগর উপজেলার বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডে শোভা পাচ্ছে। রসে ভরপুর, মিষ্টি ও সুস্বাদু এই ফল বাংলাদেশের মাটি ও নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার সঙ্গে খাপখাইয়ে নিয়েছে। এ দেশের তাপমাত্রায়ও ত্বীন মানিয়ে নিয়েছে নিজেকে। বিভিন্ন রঙের এই ফলের ফলনও ভালো।
মুরাদনগর উপজেলার বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডের উপ মহাব্যাবস্হাপক জিয়াউল কবির মুন নামে এক ইন্জিনিয়ার তার কর্মস্হল বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডের বাউন্ডারির ভিতরে প্রায় তিনটি স্পষ্টে গড়ে তুলেছেন দেশি-বিদেশি মিশ্র ফলের বাগান। তার বাগানের শোভাবর্ধন করছে ত্বীন ফল।
ত্বীন ফলের চারা আনার সময় এটির ফলন হবে কিনা সেটি নিয়ে সংশয়ে ছিলেন জিয়াউল কবির মুন। পরে ত্বীনগাছে ফল ধরতে দেখে কিছুটা অবাক হন। এখন তার মুখে স্বস্তির হাসি।
জিয়াউল কবির মুন জানান, কোনো রাসায়নিক সার ছাড়াই, মাটিতে জৈব ও কমপোজড সার মিশিয়ে লাগিয়েছেন কয়েক প্রজাতির ত্বীনগাছ। সবুজ লকলকে প্রসারিত শ্যামল পাতার গাছগুলো লম্বায় ৮ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত। বর্ষা ও শীতে ফল কম হলেও বছরের অন্যান্য সময়ে প্রতিটি পাতার গোড়ায় জন্মে একটি করে ফল।
আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ডুমুর আকৃতির এই ফল সবার দৃষ্টি কেড়েছে।এক বছরের ব্যবধানে ত্বীন ফল পাকতে শুরু করে। পাকলে লাল, খয়েরি, গোলাপি ও হলুদাভ রঙ ধারণ করে আশ্চর্য এ ফল। ফলের আকারও বড় হয়। পুরোপুরি পাকলে রসে ঠাসা ও মিষ্টি হয়ে ওঠে।
কথা হয় সৌখিন ত্বীনচাষি বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডের উপ মহাব্যাবস্হাপক জিয়াউল কবির মুনের সঙ্গে। তিনি জানান, পবিত্র কোরআন শরিফে ত্বীন ও জয়তুন ফলের কথা উল্লেখ আছে। বিষয়টি জেনে ত্বীন ফল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠি। ত্বীন চাষাবাদে সফল জিয়াউল কবির মুন জানান, বাংলাদেশে এই ফলের চারা অনেকটাই সহজলভ্য। স্বাভাবিক পরিচর্যার মাধ্যমে ত্বীন বড় হয়ে ওঠে। বেশি পানি ব্যবহার করতে হয় না। ত্বীন ফল বাংলাদেশে ড্রাই ফুড হিসাবে আমদানি করা হয়ে থাকে। বাণিজ্যিকভাবে এর উৎপাদন বাড়ানো গেলে দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণে তা সহায়ক হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রেস্ট ক্যান্সার রোধে এই ফল খুবই উপকারী। এ ছাড়া নানা রোগ নিরাময়ে বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ত্বীন। এতে আছে প্রচুর পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়াম। পুষ্টি চাহিদা পূরণেও ত্বীন গুরুত্বপূর্ণ।