সরকারের মেয়াদ প্রায় শেষ। এখন নির্বাচনই লক্ষ্য। নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক মাঠে বহু খেলা হয়েছে। এখন হবে ফাইনাল খেলা। বি এন পি এখনো সরকার পতনের আন্দোলন করছে। বি এন পি’র এই আন্দোলন যতটা না দাবী আদায়ের তার চেয়ে বেশী মুখ রক্ষার। কারন ১৪ বছরেও তারা কোন আন্দোলনে সফল হতে পারেনি। দেশে এখন নির্বাচনি হাওয়া বইছে। এই নির্বাচন নিয়ে দেশের চেয়ে বিদেশীরা আগ্রহ দেখাচ্ছে বেশী। কুটনৈতিক শিষ্ঠাচার ভুলে নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমুলক নির্বাচন দাবী করছে বিদেশী দুতাবাস। বি এন পি সহ দেশের কিছু বিদ্যান ব্যক্তি নিত্য নালিশ করছে বিদেশে গিয়ে।
বাংলাদেশে আসলে সবই আছে-গনতন্ত্রও। যা নেই তা হল নেতাদের দেশপ্রেম। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলী দিয়ে নেতারা ক্ষমতায় যেতে চায়। পুজিবাদি শক্তি পেছন থেকে তাদেরকে উস্কে দিচ্ছে। কারন বাংলাদেশ এখন আর আগের অবস্থানে নেই। পরনির্ভরতা কমিয়ে বাংলাদেশ এখন বদলে গেছে। ৭৪ সালে কিউবার কাছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার পাটদ্রব্য বিক্রি করায় কেনা খাদ্যের জাহাজ আটকে দিয়েছিল। দুর্ভিক্ষ বাঁধিয়েছিল বাংলাদেশে। কারন কিউবার উপর বানিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তারা। এখন ৩০ লক্ষ টন খাদ্য ঘাটতি পুরন করে বাংলাদেশ খাদ্য রপ্তানী করে। পন্য রপ্তানী আর উৎপাদন শিল্পে এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের তৈরী পোষাক এখন বৃহৎ রাষ্ট্রের নেতাদের গায়ে। গার্মেন্টস রপ্তানী প্রতিবেশী রাষ্ট্রকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে। দেশের মাথাপিছু আয়, শিক্ষা, গড় আয়ু এবং অবকাঠামোর ব্যপক উন্নয়ন হয়ে গেছে। জাতীয় রিজার্ভ সর্বকালের রেকর্ড ছুইয়েছে। পদ্মা সেতুর মত মেগা প্রকল্প এখন দেশীয় অর্থায়নে করার সাহস দেখিয়েছে বাংলাদেশ। এসব পরিবর্তন আর উন্নয়নের খবর বিদেশীরাও জানে।
✪ আরও পড়ুন: বি এন পি’র রাজনীতি
✪ আরও পড়ুন: ড: ইউনুস
✪ আরও পড়ুন: যুদ্ধটি সহজ হবে না!
✪ আরও পড়ুন: বিএনপি দলের এক দফা
কিন্তু বিপত্তি বেধেছে অন্যখানে। ঋণ নির্ভরতা কমিয়ে বাংলাদেশ উন্নত হলে দাতা গোষ্ঠীর ঋণ বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাবে। পুজিবাদী শক্তির এই অস্বস্থির কারনে শেখ হাসিনাও এখন আর তাদের পছন্দের তালিকায় নেই। এই অদৃশ্য পরাশক্তি বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বিকল্প নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ঋণ দিয়ে চড়া সুদের বাজারটি নিয়ন্ত্রন করতে চায়। কিন্তু শেখ হাসিনার বিকল্প তিনি নিজেই। তিনি দৃঢ় চিত্ত্বে দেশের স্বার্থের কথা বলতে ভয় করেননা। সময়টি পুজিবাদের জন্য ভাল নয় না হয় নির্মম ঘটনা ঘটাতেও দ্বিধা করত না। শেখ হাসিনা দেশের মানুষের কাছেও এখন একমাত্র ভরসাস্থল। অনেক ভুল ভ্রান্তি হলেও দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকেই আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চায়।
ভারত বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র এবং বর্তমান সরকারের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সাফল্যে ভারতও খুশী নয়। ভারত চায় বাংলাদেশের বাজারটি এককভাবে নিয়ন্ত্রন করতে। ইতিমধ্যে চীন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করায় ভারতের অস্বস্থি বেড়েছে। কারন চীন ভারতের বন্ধু রাষ্ট্র নয় (দুই বার যুদ্ধ বেঁধেছে এই দুই দেশে)। এবং চীন বাংলাদেশের বাজারে ঢুকে গেলে ভারত বিশাল অঙ্কের বাণিজ্য হারাবে। কিন্তু শেখ হাসিনার বিকল্প নেতৃত্ব তারাও খুঁজে পায়নি। বি এন পি ভারত বিদ্বেষী এবং উগ্র মৌলবাদী দল। যে কারনে ভারত বর্তমান সরকার বিরোধী না হলেও প্রকাশ্যে নির্বাচন ইস্যুতে মুখ খুলেনি।
✪ আরও পড়ুন: রাজনীতি
✪ আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুল
পুজিবাদের দালালরা রাজনীতির নামে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাই এবারের নির্বাচনটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। একটি বিষয় অবশ্য লক্ষ্যনীয়, বিরোধী দল অবিরাম আন্দোলন সংগ্রাম করলেও জনগনকে এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। বিরোরোধী দলের নেতাদের সেই ভয়টিও রয়েছে। নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলেও বি এন পি কিংবা তাদের জোট মিলে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হতে পারবেনা। কারন দলটি সাংগঠনিক সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে নেতৃত্বের ভুলে। এখন দলটির নেতৃত্বও নেই। তাহলে জনগন কাকে ভরসা করে বি এন পি এর পক্ষে ভোট দিবে? দেশের কোন উন্নয়নটি তারা করেছে? ৭১ সালেও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ঠেকাতে সপ্তম নৌবহর প্রেরন করেছিল। বাঙালী ভয় করেনি।শত্রুবাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপন যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। এখনো নির্বাচনের আগে একই পরাশক্তি ভিসা নীতি আর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রন করতে চায়! কিন্তু বাঙালী বীরের জাতি। এবারও ভোট যুদ্ধের মাধ্যমে রক্তচক্ষুকে ভয় করবেনা। দেশের স্বার্থ রক্ষায় উন্নয়নের পক্ষেই ভোট দিবে। জয়ী হবে শেখ হাসিনাই।
তবে ঘরের শত্রু বিভীষণ। দেশের অভ্যান্তরে পুজিবাদের দালালরা তৎপর রয়েছে। সুযোগ পেলেই ছোবল দিবে, দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলী দিয়ে চরম আঘাত হানবে। এবারের নির্বাচনের ভয় সেখানেই। তাই জনগনকে সজাগ থাকতে হবে যেমন করে বাঙালী সজাগ ছিল ৭১ এ। বি এন পি উগ্র মৌলবাদি শক্তির আর্থিক মদদে দেশের সংবিধান বদলের ঘোষনা দিয়েছে। এই অপশক্তিকে স্তব্দ করতে হলে নির্বাচনই একমাত্র উপায়। নির্বাচনের মাধ্যমে সকল ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে হবে। না হয় দেশ চরম সঙ্কটে পতিত হবে। শুধু আওয়ামী লীগ নয় পরাজিত হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি এবং জনগন। তাই জনগনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবারের নির্বাচন কোন পক্ষকে সমর্থন দিবে? উন্নয়নের পক্ষে না দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের পক্ষে?
✪ আরও পড়ুন: রাজকাহন
✪ আরও পড়ুন:গণতন্ত্র
✪ আরও পড়ুন:বিদেশী প্রেস্ক্রিপশনে শেখ হাসিনা চলেননা
✪ আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন এক চরম দু:সময় চলছে
*** আজ ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১১:১৮ | মঙ্গলবার ***
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি