স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্কতা শিথিল করা হয়েছে দেশে। অনেক কিছুই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এই স্বাভাবিকতা কতটা নিরাপদ তা নিশ্চিত নয় তবে, অনেকেই বের হতে শুরু করেছে। শুধু বাংলাদেশেই নয় অন্যান্য অনেক দেশেই শিথিলতা শুরু হয়েছে। যে যেভাবেই ভাবুক করোনার প্রভাব খুব শীঘ্রই কেটে যাবে মনে হয়না বরং, এই স্বাস্থ্যবিধি আইনে পরিনত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভাল কিংবা মন্দ সরকারের উপরই বর্তাবে নিঃসন্দেহে।
বাংলাদেশ ঘনবসতি হলেও এখনো পর্যন্ত সংক্রমন বা মৃতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম রয়েছে কিন্তু, রাজনীতিটি উত্তপ্ত হয়ে পরেছে মনে হয়। জাতীয় দুর্যোগে জাতীয় নেতাদের নিরবতা সন্দেহ সৃষ্টি করেছে জনমনে। দু’ চারজন গনমাধ্যমে কথা বললেও বেশীরভাগ নেতারাই নিরব। নেতাদের এমন নিরবতা ভাল লক্ষন মনে হয়নি। প্রতিদিন গনমাধ্যমে যাদের সরব উপস্থিতি ছিল তারাও নির্বাক। নেতাদের এলাকাভিত্তিক কার্যক্রমও চোখে পরেনি। নেতা ছাড়াও সুশীল সমাজের জ্ঞানী ব্যক্তিরা প্রতিদিন টক শো তে নানা বিষয়ে জ্ঞান বিলিয়েছেন, তারাও এখন অন্তরালে। সবাই কি জীবন বাঁচাতে স্বেচ্ছায় আত্নগোপনে চলে গেছেন না সরকারের নানামুখী কর্মসূচিতে অসন্তুষ্টির প্রকাশ করছেন বোঝা না গেলেও সন্দেহটি বেড়েই চলেছে। বিরোধী দলের নেতারা একেবারেই নিরব, ব্যক্তিগত উদ্দ্যোগেও কোন সমাজকর্মে দেখা যায়নি তাদের। একমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কারোই সরব উপস্থিতি নেই কোথায়ও। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন বিভিন্ন জেলার কর্মকর্তাদের সাথে টেলিকনফারেন্স করেন, সেখানেও কোন এম পি, মন্ত্রী কিংবা বড় কোন নেতার উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়নি। বিষয়টি এখন জনসম্মুখেও প্রকাশ পেয়েছে। বি এন পি সরকারের ভুল আবিষ্কারের জন্য নেতাদের নিয়োগ দিয়েছে। সরকারের ভুল আবিষ্কার করে তারা আন্দোলনে যাওয়ার পায়তারা করছে। ইতিমধ্যে প্রবাসে সরকার বিরোধী তৎপরতার কথা আগেই জানিয়েছি। আপদকালীন সময়ে দেশের মানূষের সাহায্যে না এসে রাজনৈতিক উদ্দ্যেশ্য আদায়ের লক্ষনটি ভাল মনে হয়নি। ইদানিং কেউ কেউ বলাবলিও শুরু করেছেন নানা অনিয়মের কথা। কোভিড-১৯ পুরু বিশ্বকেই ঝাঁকি দিয়েছে। উন্নত দেশেও এখন অর্থনৈতিক মন্দাভাব লক্ষ্যনীয়। উৎপাদন বা রপ্তানী বন্ধ প্রায় সব দেশেই। অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে বাংলাদেশও। এমন অবস্থায় দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিপর্যয় ডেকে আনবে বৈকি। বিজ্ঞ নেতারা এমন জাতীয় দুর্যোগে নিরব থাকা ভীতি ছড়াচ্ছে জনমনে। বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে, চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হলে অর্থনৈতিক পরিবর্তনও দৃশ্যমান হবে শীঘ্রই, জনগনের জীবনমান বৃদ্ধি পাবে। করোনা মহামারী দেশকে পিছিয়ে দিবে তা কোনভাবেই কাম্য নয়। রাজনৈতিক যোদ্ধরাও নিরব থেকে দর্শকের ভূমিকায় থাকবেন তা প্রত্যাশিত নয়। সবিনয়ে নিবেদন করবো সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্যোগ মোকাবেলায় এগিয়ে আসতে। জননেত্রী শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রসংশা না করলেও সত্যটি উপলব্ধি করতে। দেশ সকলের, প্রতিটি মানূষের। দেশ গড়ার শপথই হউক আমাদের লক্ষ্য।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক
টরেন্টো, কানাডা
১৩ মে ২০২০।