বাংলাদেশে রাজনীতির উপর মানূষের আস্থা হারিয়ে গেছে। আগে রাজনৈতিক নেতাকে দেখলে মানূষ সম্মান দেখাত, এখন সম্ভব হলে এড়িয়ে চলে। নেতারা মানূষকে যতটা বোকা ভাবে, দেশের মানুষ ততটা বোকা নয়। দেশে অনেক নেতা রয়েছেন যারা, স্ব স্ব অবস্থানে যোগ্যতা দেখিয়েছেন,প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন নিজেদের পেশায়। মানুষ তাদের সম্মান দেখিয়েছে যথাযথ ভাবেই। এই বিজ্ঞ মানুষগুলি আগে দলের হয়েই পরিচিতি পেয়েছেন, এখন তারা দলছুট হয়ে রাজনীতি করেন। শিক্ষিত, ভদ্র এবং যোগ্য এই মানুষগুলি শুধু সমালোচনা করেন। মাঝে মাঝে একত্র হয়ে হুংকার দেন সরকার পতনের। তাদের দল আছে, কর্মী নেই। নির্বাচনেও জয়ী হতে পারেননা। এরা রাজনীতি করেন শুধুমাত্র আওয়ামিলীগের বিরুদ্ধাচরনের জন্য। তারা চান অন্যদল জয়ী হয়ে তাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে। এই পার্টটাইম পলেটিশিয়ানরা কোন আন্দোলনেই সফল হয়নি, হবেওনা। বয়সের ভারে ন্যুজ হয়ে পরেছেন অনেকে। কিন্তু এদের বুদ্ধি আছে, সব বিষয়েই জ্ঞান বিলান। ডঃ কামাল হোসেন, ডাঃ বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ডাঃ জাফরউল্লা চৌধুরী, ডঃ মোহাম্মদ ইউনুছ, এদের যোগ্যতা নিয়ে কারো কোন সন্দেহ নেই। এই বিজ্ঞ মানূষগুলি যদি শেখ হাসিনার সাথে মিলে দেশ গঠিনে স্বক্রিয় হতেন তাহলে, দেশ এগিয়ে যেত বহু আগেই। ৭২ সালেও একই ভুল করেছেন মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানি। সেদিন যদি তিনি দেশ পুনর্গঠনে এগিয়ে আসতেন তাহলে আজ ইতিহাস ভিন্ন ভাবে লেখা হত। দেশ বদলে যেত, বংগবন্ধুকে জীবন দিতে হতনা আর, মাওলানা ভাসানি হতেন মাও সেতুং। জাসদ নেতারা সেদিনও সঠিক পথে চলেনি, আজও চলছেনা। জাসদ সবচেয়ে বড় অপরাধটি করেছে দল ভেংগে। জাসদ সংগঠিত থাকলে বি এন পি বা জাতীয় পার্টির মত দল জন্ম হতনা। মাহামুদুর রহমান মান্না ভাল বক্তা , ভাল রাজনৈতিক নেতা সেদিনও ছিলেননা- আজওনা। ক্ষমতার লক্ষ্যে নীতিহীনতার রাজনীতি তার যোগ্যতাটিও সর্বনাশ করেছে। এই নেতারা সময় সময় বি এন পি’র- জামাতের সাথে জোট বেঁধে আন্দোলন করতে চেয়েছেন। নিজেরাই দ্বন্দে জড়িয়ে চুপটি মেরে বসে গেছেন। এখন তাদের অবস্থান রাজনীতিতেও নেই, জনগনও তাদের কথা বিশ্বাস করেনা। না তবুও তারা নেতা, স্বঘোষিত দলহীন, কর্মীহীন নেতা। প্রায়ই বক্তৃতা করেন,বিবৃতি দেন গন মাধ্যমে। হুংকার দেন গনআন্দোলনের। গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সবক শোনান জাতীকে।
রাজনীতির পাল্টা দৃশ্যটি দেখিয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। বিদগ্ধ মানুষের গালভরা বক্তব্যকে অগ্রাহ্য করে দেশের উন্নয়ন করে ফেলেছেন। এখন পদ্মা সেতু সম্পন্ন হয়ে গেছে, বিদ্যুতের কারনে উৎপাদন বন্ধ হয়নি, রপ্তানি বেড়েছে, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে, রাজস্ব ভান্ডারে মজুদ হয়েছে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এখন বন্যায় মানূষ না খেয়ে মরেনা, কৃষি উৎপাদন চাহিদা পুরন করেও উদবৃত্ত থাকে, দেশ এখন মধ্য আয়ের দেশে উন্নিত হয়ে গেছে। দুঃখ হয়, দেশের উন্নয়নে এই শিক্ষিত মানূষগুলির কোন অবদান নেই। রাজনীতি কিংবা উন্নয়ন কোনখানেই এরা অবদান রাখতে পারেননি শুধু, সমালোচনা করেছেন সরকারের। নিত্য অপবাদ দিয়েছেন শেখ হাসিনা আর তার সরকারের বিরুদ্ধে। এই নেতারা কেউ দেশ বিরোধী নন, মুক্তিযূদ্ধের কথাই বলেন বক্তৃতা আর বিবৃতিতে কিন্তু, দেশের কোনই উপকার করতে পারেননি। একটি কাজ তারা সুচারুরূপে করেছেন, শুদ্ধ ভাষায় গুছিয়ে সরকার এবং শেখ হাসিনার সমালোচনা। এখনও সময় আছে, যোগ্যতা দিয়ে দেশের স্বার্থে জনগনের জন্য কিছু করুন নাহয়, বক্তৃতা দিয়েই অপেক্ষা করতে হবে ” দেখি শেখ হাসিনা কি কিরে!”।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরেন্টো, কানাডা
৭ সেপ্টম্বর ২০২০।